নিউটনিয়ান বলবিদ্যা | HSC পদার্থবিজ্ঞান Notes

পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্র নোট
নিউটনিয়ান বলবিদ্যা নোট

বল

যা স্থির বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তাকে গতিশীল করে বা করতে চায় এবং গতিশীল বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তার গতির পরিবর্তন করে বা করতে চায় তাকে বল বলে।

বলের বৈশিষ্ট্য

১) বলের দিক আছে।

২) বল জোড়ায় জোড়ায় ক্রিয়া করে।

৩) কোনো বল একটি বস্তুতে ত্বরণ সৃষ্টি করতে পারে।

৪) বল কোনো বস্তুকে বিকৃত করতে পারে।

✔ বল ভেক্টর রাশি।

✔ বল ত্বরণকারী বা মন্দনকারী হতে পারে।

মৌলিক বল

যে সকল বল অন্যান্য বল থেকে উৎপন্ন হয় না বরং অন্য কোনো বলের রূপ বা রপান্তর নয় বরং অন্যান্য বল এই সকল বলের কোনো না কোনা রূপের প্রকাশ, সে সকল বলকে মৌলিক বল বলা হয়।

মৌলিক বলের প্রকারভেদ

মৌলিক বল চার প্রকার। যথাঃ

১) মহাকর্ষ বল (Gravitational force)

২) তাড়িতচৌম্বক বল (Electromagnetic force)

৩) সবল নিউক্লিয় বল (Nuclear strong force)

৪) দুর্বল নিউক্লিয় বল (Nuclear weak force)

নিউটনের গতিসূত্র

১ম সূত্রঃ বাহ্যিক বল প্রয়োগে বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন করতে বাধ্য না করলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থিরই থাকবে এবং গতিশীল বস্তু সমদ্রুতিতে সরল পথে চলতে থাকবে।

২য় সূত্রঃ বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার তার উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনও সে দিকে ঘটে।

৩য় সূত্রঃ প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।

✔ ১৬৮৭ সালে স্যার আইজ্যাক নিউটন তাঁর অমর গ্রন্থ "ন্যাচারালিস ফিলোসোফিয়া প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেমেটিকা"তে বস্তুর ভর, গতি ও বলের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে তিনটি সূত্র প্রকাশ করেন। এ তিনটি সূত্রই নিউটনের গতি সূত্র নামে পরিচিত।

ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র

যখন কোনো ব্যবস্থার উপর প্রযুক্ত নিট বাহ্যিক বল শূন্য হয়, তখন ব্যবস্থাটির মোট ভরবেগ সংরক্ষিত থাকে।

জড়তার ভ্রামক

কোনো নির্দিষ্ট সরলরেখা থেকে কোনো দৃঢ় বস্তুর প্রত্যেকটি কণার লম্ব দূরত্বের বর্গ এবং এদের প্রত্যেকের ভরের গুণফলের সমষ্টিকে ঐ সরলরেখার সাপেক্ষে ঐ বস্তুর জড়তার ভ্রামক বলে।

চক্রগতির ব্যাসার্ধ

কোনো দৃঢ় বস্তু সমগ্র ভর যদি একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত করা যায় যাতে করে একটি নির্দিষ্ট অক্ষের সাপেক্ষে ঐ কেন্দ্রীভূত বস্তু কণার জড়তার ভ্রামক, ঐ নির্দিষ্ট অক্ষের সমগ্র দৃঢ় বস্তুর জড়তার ভ্রামকের সমান হয়, তাহলে ঐ নির্দিষ্ট অক্ষ থেকে কেন্দ্রীভূত বস্তু কণার লম্ব দূরত্বকে চক্রগতির ব্যাসার্ধ বলে।

কৌণিক ভরবেগ

ঘূর্ণায়মান কোনো কণার ব্যাসার্ধ ভেক্টর এবং ভরবেগের ভেক্টর গুণফলকে কৌণিক ভরবেগ বলে।

টর্ক

ঘূর্ণায়মান কোনো ব্যাসার্ধ ভেক্টর এবং কণার উপর প্রযুক্ত নিট টর্ক শূন্য হলে ব্যবস্থাটির মোট কৌণিক ভরবেগ সংরক্ষিত থাকে।

কৌণিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র

কোনো ব্যবস্থার উপর প্রযুক্ত নিট টর্ক শূন্য হলে ব্যবস্থাটির মোট কৌণিক ভরবেগ সংরক্ষিত থাকে।

কেন্দ্রমুখী বল

যখন কোনো বস্তু বৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকে তখন ঐ বৃত্তের কেন্দ্র অভিমুখে যে নিট বল ক্রিয়া করে বস্তুটিকে বৃত্তাকার পথে গতিশীল রাখে তাকে কেন্দ্রমুখী বল বলে।

কেন্দ্রবিমুখী বল

কোনো বস্তুকে বৃত্তাকার পথে ঘুরতে হলে ঐ বস্তুর উপর যে বল প্রয়োগ করা হয় তাই হচ্ছে কেন্দ্রমুখী বল। এই বলের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ যে বল বৃত্তের কেন্দ্রের উপর ব্যাসার্ধ বরাবর কেন্দ্রের বাইরের দিকে ক্রিয়া করে তাকে কেন্দ্রবিমুখী বল বলে।

ঘাত বল

খুব সীমিত সময়ের জন্য খুব বড় মানের যে বল প্রযুক্ত হয় তাকে ঘাত বল বলে।

বলের ঘাত

কোনো বল ও বলের ক্রিয়াকালের গুণফলকে ঐ বলের ঘাত বলে।

সংঘর্ষ

দুটি বস্তু যদি একটা খুব বড় মানের বলে খুব অল্প সময়ের জন্যে পরস্পরকে আঘাত করে তাহলে তাকে বলা হয় সংঘর্ষ।

স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ

দুটি বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষের ফলে যদি বস্তুগুলোর মোট গতিশক্তি সংরক্ষিত থাকে তাহলে সেই সংঘর্ষকে বলা হয় স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ।

অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ

দুটি বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষের ফলে যদি বস্তুগুলোর মোট গতিশক্তি যদি সংরক্ষিত না থাকে তাহলে সেই সংঘর্ষকে বলা হয় অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ।

No Comment
Add Comment
comment url