ল্যাবরেটরির নিরাপদ ব্যবহার | HSC রসায়ন প্রথম পত্র Notes
রসায়ন প্রথম পত্র নোট
ল্যাবরেটরির নিরাপদ ব্যবহার নোট
রিসাইকেলিং বলতে কি বুঝ?
সকল ল্যাবরেটরিতেই রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটনের সময় কিছু না কিছু বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এ সব বর্জ্যকে পুড়িয়ে না ফেলে বা পরিবেশে নিক্ষেপ না করে যদি কাজে লাগিয়ে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী পদার্থে পরিণত হয় তাহলে এই পদ্ধতিকে রিসাইকেলিং বলে। এতে কোন উপাদান ব্যয় যেমন তেমনি পরিবেশের উপর দূষিত বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাব কমে আসে।
পিপেটকে আয়তনমাত্রিক পরিমাপক বলা হয় কেন?
যে সব সরু কাচের নলের নিচের সূক্ষ্ম ছিদ্রযুক্ত মুখ দিয়ে তরল কেমিক্যাল বের হয় তাকে পিপেট বলে।
এটি তরল রাসায়নিক পদার্থ বা ডিস্টিল ওয়াটার অল্প পরিমাণে পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন তরল পদার্থ পরিমাপের জন্য পিপেট ব্যবহার করা হয়। পিপেট দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেহেতু পিপেটের সাহায্যে তরল পদার্থ পরিমাপ করা হয়।
সুতরাং এটি দ্বারা তরলের আয়তনই পরিমাপ করা হয়। যেহেতু পিপেটের দ্বারা আয়তন পরিমাপ করা হয় তাই পিপেট কে আয়তন মাত্রিক পরিমাপক বলা হয়।
পরীক্ষাগারে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যসমূহ ব্যাখ্যা কর।
প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্য তিনটি -
জীবন রক্ষাঃ প্রতিটি প্রাথমিক মেডিকেল সহায়তার প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন রক্ষা।
অধিকতর ক্ষতির আশঙ্কা নিরোধঃ এতে বাহ্যিক ফ্যাক্টর বিবেচনা করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অন্যত্র সরিয়ে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা হয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা কৌশলগুলো প্রয়োগ করে বিপদজ্জনক রক্তপাত থেকে রক্ষা করা হয়।
নিরাময় উন্নীতকরণঃ আক্রান্ত ব্যক্তিকে ফার্স্ট এইড প্রক্রিয়ায় আনয়ন করে অসুস্থতা অথবা আঘাত থেকে নিরাময় করার চেষ্টা করা হয়। যেমনঃ ক্ষতিগ্রস্থ স্থানে প্লাস্টার লাগানো।
বিকারের দ্রবণকে তাপ দেওয়ার কৌশল কী?
বিকারের অভ্যন্তরস্থ দ্রবণকে উত্তপ্ত করতে হলে ত্রিপদী স্ট্যান্ডের উপর রক্ষিত তারজালির ওপর রেখে করতে হবে - কোনো মতেই সরাসরি উন্মুক্ত শিখায় তাপ দেওয়া যাবে না। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে উত্তম পন্থা পানিগাহে উষ্ণকরণ। তাপ দেওয়ার সময় বিকারে রক্ষিত দ্রবণ বা তরল শুকিয়ে যেন না যায় তা লক্ষ রাখতে হবে। স্বল্প পরিমাণ তরল অবশিষ্ট থাকা অবস্থায় তাপ দেওয়া বন্ধ করা হয়।
পরীক্ষাগারে প্রাইমারী স্ট্যান্ডর্ড পদার্থ বলতে কী বোঝায়?
যে সব পদার্থের দ্রবণের ঘনমাত্রা বায়ুর উপাদান দ্বারা সহজে আক্রান্ত হয় না এবং দীর্ঘদিন পর্যন্ত যাদের ঘনমাত্রা অপরিবর্তিত থাকে তাদেরকে প্রাইমারী স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ বলে।
যেমনঃ K2Cr2O7, Na2CO3।
এজন্যই এই দ্রবণগুলো প্রমাণ দ্রবণ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণ কী?
ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপদজনক রাসায়নিক দ্রব্যগুলো নিরাপদ ও গুণগত মান বজায় রেখে সংরক্ষণ করাকে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণ বলে।
প্রাইমারী স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ কী?
যেসব পদার্থ বায়ুর কোন উপাদান (জলীয় বাষ্প, O2, CO2) দ্বারা আক্রান্ত হয় না বলে দীর্ঘদিন যাবত যাদের দ্রবণের ঘনমাত্রার পরিবর্তন ঘটে না তাদের প্রাইমারী স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ বলে।
যেমনঃ Na2CO3, K2Cr2O7 ইত্যাদি।
অরবিটাল সংস্করণ কী?
বিক্রিয়াকালে কোনো পরমাণুর যোগ্যতা স্তরের বিভিন্ন অরবিটালসমূহ পরস্পরের সাথে মিশ্রিত হয়ে পরে সমশক্তির অরবিটাল সৃষ্টি করার প্রক্রিয়াকে অরবিটাল সমূহের সংকরণ বলা হয়।
ভিনেগার এর খাদ্য সংরক্ষণ কৌশল
খাদ্য দ্রব্যকে ভিনেগারে ডুবিয়ে রাখলে উচ্চ অম্লীয় পরিবেশে অণুজীব বাঁচতে পারে না। তাই খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষিত হয়। ফল, সবজি, মাংস এবং মাছ পিকলিং যুক্ত করে সংরক্ষণ করা হয়। পিকলিং কৃত খাদ্য মসলা, লবণ বা চিনি যুক্ত করে খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধি করা হয়। পিকলিংকে অন্য খাদ্য সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত করা হয়।
যেমন - লবণের দ্রবণে শসাকে ফারমেন্টেশন করা হয় পরে ভিনেগারের লঘু পিকলিং তৈরি করে উক্ত দ্রবণে খাদ্য কৌটাজাত বা বোতলজাত করা হয়।
অম্ল-ক্ষার টাইট্রেশনে ব্যুরেটের ব্যবহার বিধি
অম্ল-ক্ষার টাইট্রেশনের পূর্বে ব্যুরেটকে প্রথমেই পরিষ্কার করে নিতে হবে। প্রথমে সাধারণ পানি, তারপর ক্রোমিক এসিড, তারপর পাতিত পানি দ্বারা ধুয়ে নিতে হবে। সবশেষে ব্যুরেটে যে ক্ষারীয় দ্রবণ নেয়া হবে তা দিয়ে রিনজ করে নেয়ার পর ক্ল্যাম্প এর সাথে যুক্ত করতে হবে। এরপর ব্যুরেট এ ক্ষার দ্রবণ নিয়ে সরু নলকে সম্পূর্ণভাবে বায়ু বুদবুদ মুক্ত করতে হবে।
অতঃপর কনিক্যাল ফ্লাস্কের মধ্যে মধ্যে প্রয়োজন মতো টাইট্রেট (ক্ষার) দ্রবণ ব্যুরেট এর স্টপকক ঘুরিয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় যোগ করতে হবে। স্টপকর্ক বা গ্লাস স্টপারকে অবশ্যই বাম হাতে এবং কনিক্যাল ফ্লাস্ককে ডান হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
ল্যাবরেটরিতে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করা উচিত কেন?
ল্যাবরেটতে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করা উচিত কেননা, ল্যাবরেটরিতে আমরা বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়কারক ও ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে থাকি। এগুলো ব্যবহারের সময় যদি কোন না কোন ভাবে আমাদের গায়ে লেগে যায় তবে ত্বকের ক্ষতিসহ অন্য যেকোনো বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দেয়।
যেমন - গাঢ় H2SO4, HNO3 ও ক্রোমিক এসিড কোন কিছুর ওপর পড়লে তা মারাত্মকভাবে পুড়ে যায়। তাই এরূপ উপাদান ব্যবহারের সময় অবশ্যই হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করা উচিত।
গবেষণাগারে তাপ প্রয়োগে জারণ শিখা ব্যবহারের সুবিধা কী কী?
গবেষণাগারে তাপ প্রয়োগে জারণ শিখা ব্যবহারের সুবিধা - জারণ শিখায় যেহেতু জ্বালানির সম্পূর্ণ দহন ঘটে সেহেতু এতে অদগ্ধ কঠিন কণা অনুপস্থিত থাকে। এ কারণে এ শিখা ব্যবহার করে তাপ প্রদান করা হলে পাত্রের তলায় কালির দাগ পড়ে না। জ্বালানির সম্পূর্ণ দহন হওয়ায় এ শিখায় প্রাপ্ত তাপশক্তি বিজারণ শিখার তুলনায় অধিক হবে। ফলে দ্রুত পরীক্ষণ সম্পূর্ণ করা যাবে। এজন্য গবেষণাগারে তাপ প্রয়োগে জারণ শিখা ব্যবহার করা সুবিধাজনক।
বিকারে তাপ দেওয়ার কৌশল ব্যাখ্যা কর।
বিকারে তাপ প্রয়োগ করে অনেক ক্ষেত্রে বিক্রিয়ার গতি ত্বরান্বিত করা হয়। তাছাড়া, বিকার কোন লোহার তৈরি পাটাতনে স্থাপিত তারজালির উপর স্থাপন করে নিচে বার্নার এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যেন তাপের নীল শিখা তারজালি হয়ে এর গায়ে লাগে। বার্নারে তাপ অতি সতর্কতার সাথে প্রয়োগ করতে হবে যেন তরল ফুটে এর মুখে দিয়ে বাইরে না পড়ে। সাবধানতার সাথে কাচের বিকারে তাপ দিতে হবে। বিক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর যতক্ষণ ঠাণ্ডা না হয় ততক্ষণ হাত দিয়ে না ধরে সতর্কতার সাথে নামাতে হবে।
Air Hole কী?
বুনসেন বার্নারে বায়ুনল এর নিচের প্রান্তে একটি সরু ছিদ্র থাকে যা বায়ু বা অক্সিজেন প্রবেশের মুখ হিসেবে কাজ করে থাকে। একে Air Hole বলে।
ওয়াশ বোতল কী?
ল্যাবরেটরিতে গ্লাসসামগ্রী বা অন্যান্য যন্ত্রপাতি পরিষ্কারের জন্য বিশুদ্ধ পানি একটি ফ্লাস্কে বা বোতলে নেয়া হয় যা মূলত প্লাস্টিকের তৈরী এবং এতে নলযুক্ত কর্ক লাগানো থাকে, একেই ওয়াশ বোতল বলে।
রসায়ন পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত এক ধরনের প্লাস্টিকের তৈরি বোত, যার মুখে কর্ক লাগানো এবং কর্কের মাঝখানে ছিদ্রপথে একটি নল লাগানো থাকে তাই ওয়াশ বোতল।
স্যাবল ব্রাশ কী কাজে লাগে?
ডিজিটাল ব্যালেন্স কোন পদার্থকে ওজন নেয়ার পূর্বে Weighing pan বা ওজন নেয়ার স্থানের সমতল প্যানটিকে পরিষ্কার করে নেয়া হয় যাতে কোনরূপ ধূলাবালি না থাকে। পরিষ্কারকরণের কাজে যে ব্রাশটি ব্যবহার করা হয় তা হলো স্যাবল ব্রাশ। আবার শুকনো ল্যাবরেটরি গ্লাস সামগ্রী পরিষ্কারকরণেও স্যাবল ব্রাশ কাজে লাগে।
রিয়েজেন্ট কী?
Reagent বা বিকারক বলতে কিছু নির্দিষ্ট রাসায়নিক দ্রব্য বা যৌগকে বুঝায়, যাদের উপস্থিতিতে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয়।
রিয়েজেন্ট ব্যবহার সতর্কতা
- অবশ্যই রিয়েজেন্ট বোতলের গায়ে লেভেলিং দেখে ব্যবহার করতে হবে।
- রিয়েজেন্ট উৎপাদন ও মেয়াদকাল দেখে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
- রিয়েজেন্ট ব্যবহার করার পর রিয়েজেন্ট বোতল যথাস্থানে রাখতে হবে।
- ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিষাক্ত রিয়েজেন্টের বদলে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিকর রিয়েজেন্ট ব্যবহার করা।
রিয়েজেন্ট বোতল কী?
রিয়েজেন্ট ড্রপার সংযুক্ত 50 mL বা 60 mL কাচ বা প্লাস্টিক বোতলকে রিয়েজেন্ট বোতল বলা হয়। রিয়েজেন্ট বোতলের গায়ে অবশ্যই লেবেলিং করতে হবে। রিয়েজেন্ট বোতলের মুখ অবশ্যই কর্ক দিয়ে বন্ধ করতে হবে।
কঠিন রিয়েজেন্ট স্থানান্তরের জন্য কাগজ বা স্পেচুলা ব্যবহার করহে হবে। তরল রিয়েজেন্ট স্থানান্তরের জন্য ড্রপার ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত রিয়েজেন্ট ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যবহৃত রাসায়নিকের সংরক্ষণ কী?
রাসায়নিক পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্য থেকে সৃষ্ট বর্জ্যের কারণে পরিবেশ দূষিত হতে পারে। যে পদ্ধতিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক বর্জ্য সংরক্ষণ করা হয়, তাকে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যের সংরক্ষণ বলা হয়।
ব্যুরেট পাঠ নেওয়ার সময় তরলের নিম্নতর মিনিসকাস ব্যুরেটের দাগ ও চোখের দৃষ্টিরেখা ভিন্ন সরলরেখায় হলে কী সমস্যা হত - ব্যাখ্যা কর।
ব্যুরেটে রক্ষিত দ্রবণের পরিমাণ বা আয়তনের পাঠ নেওয়ার সময় তরলের নিম্নতর মিনিসকাস, ব্যুরেটের দাগ ও চোখের দৃষ্টিরেখা একই সমতলে থাকতে হবে। যদি এর ব্যতিক্রম ঘটে তাহলে ব্যুরেটে রক্ষিত দ্রবণের আয়তন গঠিত হবে না এবং বিক্রিয়ার সময় কম বা বেশি যৌগ ব্যবহৃত হবে।
সুতরাং বিক্রিয়ার ফলাফলে ভিন্নতা দেখা দিবে।
ল্যাবরেটরিতে গ্লাস সামগ্রীকে কেন পরিষ্কার করে রাখা হয়?
পরীক্ষাগারে গ্লাস সামগ্রীকে পরিষ্কার রাখার কারণগুলো হলো -
১) অপরিষ্কার পাত্রে বিক্রিয়া ঘটালে / অপরিষ্কার পাত্র নিয়ে কাজ করলে পরীক্ষার ফলাফল সঠিক পাওয়া যায় না।
২) অনেক কাচপাত্র মূল্যাবান যেগুলো পরিষ্কার না করলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
পরিমাপক ফ্লাস্ক কী?
চোঙাকৃতির এক মুখ বন্ধ ও অন্য মুখ খোলা মিলিলিটারে দাগাঙ্কিত মোটা কাচনল যার সাহায্যে ল্যাবরেটরিতে তরল পরিমাপ করা হয় তাকে পরিমাপক ফ্লাস্ক বলে।
ব্যুরেট কী?
ব্যুরেট হচ্ছে স্টপকর্ক যুক্ত ও সুষম ছিদ্র বিশিষ্ট দাগাংকিত একটি কাঁচনল যাতে অজানা বা জানা দ্রবণ নিয়ে টাইট্রেশনের মাধ্যমে অপরটির ঘনমাত্রা নির্ণয় করা হয়।
নির্দিষ্ট আয়তনের কোন তরল পদার্থ কোথাও স্থানান্তর করতে ব্যুরেট ব্যবহার করা হয়। এর সাহায্যে 1 মি.লি. এর 10 ভাগের একভাগ পর্যন্ত সূক্ষ্মভাবে আয়তন পরিমাপ করা যায়। ব্যুরেট ব্যবহার করার জন্য প্রথমে একে পরিষ্কার পানি, K2Cr2O7 এবং H2SO4 দ্বারা ধৌত করা হয়। অতঃপর যার আয়তন নির্ণয় করার জন্য ব্যুরেট ব্যবহার করব তার কিছুটা নিয়ে একে Rinse করতে হবে এবং খেয়াল করতে হবে স্টপকর্কটি ঠিকমত কাজ করছে কিনা। এরপর এতে কিছু পরিমাণ তরল নিয়ে এর পাঠ নিতে হবে। তরল পদার্থ নেওয়া হলে স্টপকর্ক ভালভাবে বন্ধ করতে হবে এবং পাঠ নিতে হবে। ঐ দুই পাঠের পার্থক্যই হচ্ছে স্থানান্তরিত তরলের আয়তন।
ল্যাবরেটরিতে মাস্ক পরা জরুরি কেন?
ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন পরীক্ষায় বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস নির্গত হয়। মাস্ক ব্যবহার করলে এ গ্যাসগুলো শ্বাস-প্রশ্বাসে আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে এ সকল গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।
তাই ল্যাবরেটরিতে মাস্ক পরা জরুরি।
বিপদ সংকেত কী?
রাসায়নিক দ্রব্যের সম্ভাব্য বিপদ নির্দেশক আন্তর্জাতিক স্বীকৃত চিহ্নসমূহকে বিপদ সংকেত বলে।
ব্যুরেট রিডিং নেওয়ার পদ্ধতি
ব্যুরেট পাঠ নেওয়ার পূর্বে পাতিত পানি যোগ করে ভালোভাবে রিঞ্জ করতে হবে। স্টপকর্ক বন্ধ করে ব্যুরেটের প্রয়োজনীয় অংশ ফানেলের সাহায্যে বিকারক দ্বারা পূর্ণ করতে হবে। এর ব্যুরেটের উচ্চতা ঠিক রেখে প্রাথমিক পাঠ নিতে হবে। পাঠ গ্রহণের সময় lower meniscus নিতে হবে। এরপর প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিকারক ব্যুরেট হতে নেওয়া হলে ব্যুরেটের শেষ পাঠ গ্রহণ করতে হবে।
ডিজিটাল ব্যালেন্স ব্যবহারে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়?
ডিজিটাল ব্যালেন্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
- উত্তপ্ত উপাদানকে পরিমাপ করা যাবে না।
- ক্ষয়কারক পদার্থ যা ব্যালেন্স নষ্ট করতে পারে তা ব্যবহার করা যাবে না।
- তরলের পরিমাপের সময় তা যেন ব্যালেন্সের ভিতর বা প্যানেলে না পড়ে।
- ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ওজন নেয়া যাবে না।
বিকার তৈরিতে বোরোসিলিকেট গ্লাস ব্যবহার করা হয় কেন?
বোরো সিলিকেটের তৈরি গ্লাস অধিক টেকসই এবং তাপ প্রয়োগে এদের খুব কম প্রসারণ ঘটে ফলে এরা তাপে সহজে ফেটে যায় না, এদেরকে অনেক সময় পাইরেক্স গ্লাস বলা হয়ে থাকে।
সুতরাং অধিক স্থায়িত্ব এবং প্রসারণ সহগ কম হওয়ায় বিকার তৈরিতে বোরো সিলিকেট গ্লাস ব্যবহৃত হয়।
মেজারিং সিলিন্ডারে নির্ভুল পরিমাপের জন্য করণীয় কী?
মেজারিং সিলিন্ডারের সাহায্যে তরল পদার্থের তরল পদার্থের পরিমাণ করা হয় নির্ভুল পরিমাপের ক্ষেত্রে রঙিন তরলের (ব্রোমিন) উপরের তলের পাঠ এবং স্বচ্ছ তরলের ক্ষেত্রে নিচের তরলের পাঠ নেয়া হয়। এ নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটলে তরলের পরিমাপে ভুল আসতে পারে। তাছাড়া তরল নেয়ার সময় ফানেল ব্যবহার করতে হবে যাতে সিলিন্ডারের গায়ে লেগে থাকা তরল পাঠে তারতম্য ঘটাতে না পারে।
মেজারিং সিলিন্ডারের ব্যবহার
মেজারিং সিলিন্ডার দিয়ে তরল পদার্থসমূহের আয়তন বের করা যায়। এর গায়ে বিভিন্ন আয়তনের দাগ কাটা থাকে। তরলকে এখানে নিয়ে তরলের লেবেলের সাথে চোখ একই সমতলে নিয়ে তরলের নিম্ন তলের পাঠ নিতে হবে।
ল্যাবরেটরিতে অগ্নি ঘণ্টা কোথায় লাগানো উচিত?
অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের পাশেই যাতে চোখে পড়ে এমন স্থানে দেয়ালের সাথে অগ্নি ঘণ্টা লাগানো উচিত।
ল্যাবরেটরিতে নিরাপদ কম্বল ব্যবহার করা হয় কেন?
ল্যাবরেটরিতে নিরাপদ কম্বল ব্যবহার করা হয়, কারণ যদি আগুন ধরে যায় তবে উক্ত কম্বল দিয়ে চেপে ধরে আগুন ধরে নিভানোর চেষ্টা করতে হবে।
এটি ফায়ার ঘণ্টার পাশে লাল বাক্সে রাখতে হবে।
ব্যুরেটের দুটি ব্যবহার লিখ।
১) সুনির্দিষ্ট পরিমাণ তরল পরিমাণ করার জন্য।
২) টাইট্রেশনে কনিক্যাল ফ্লাস্কে জানা বা অজানা দ্রবণ যোগ করতে।
রাইডার ধ্রুবক কী?
নিক্তির বীমের দৈর্ঘ্যের ওপর প্রতি শতাংশ ব্যবহৃত রাইডারের ওজনের পার্থক্যকে রাইডার ধ্রুবক বলে।
ফার্স্ট এইড বক্স কী?
কোনো দুর্ঘটনায় আঘাত প্রাপ্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ও ঔষধপত্র একত্রে যে বক্সে রাখা হয় তাকে ফাস্ট এইড বক্স বলা হয়।
বুঙ্গি ব্যালেন্সের দুটি বৈশিষ্ট্য লিখ।
বুঙ্গি ব্যালেন্সের বৈশিষ্ট্য -
- এটি বীম, নব, পাল্লা, স্তম্ভ, দণ্ড, স্কেল, নির্দেশক নাট, রাইডার প্রভৃতি অংশ নিয়ে গঠিত।
- এ ব্যালেন্স হস্ত চালিত।
পিপেট কী?
পিপেট হচ্ছে দ্রবণ স্থানান্তরে ব্যবহৃত দুই মুখ খোলা কাচনল যার নিচের মুখটি অপেক্ষাকৃত বেশি সরু এবং মাঝ অংশ মোটা বাষ্পের মতো ফুলানো থাকে।
নির্দিষ্ট আয়তনের তরল স্থানান্তরের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এটি সূক্ষ্মভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ তরল দ্রবণ স্থানান্তরে কাজ করে। যার থেকে তরল পদার্থ নিতে হবে তার মধ্যে পিপেটের সরু প্রান্ত চুবিয়ে অপর প্রান্তে মুখ লাগিয়ে নির্দিষ্ট দাগ পর্যন্ত তরল পদার্থ টেনে নিতে হবে। এরপর খুব দ্রুত মুখ সরিয়ে খোলা মুখে হাত দ্বারা চেপে ধরতে হবে যাতে তরল পড়ে না যায়। এবার এটিকে ধরে যেখানে ঢালতে হবে সেখানে নিয়ে হাত সরিয়ে দিলেই সব তরল সেখানে পড়ে যাবে।
পোর্সেলিন লেবেল কী?
সুষমভাবে তাপ সঞ্চালনের উদ্দেশ্যে তারজালিতে যে পোর্সেলিন লাগানো হয় (যার উপর মূলত গ্লাস সামগ্রী বসানো হয়) তাকে পোর্সেলিন লেবেল বলে।
রি-সাইকেলিং কী?
ল্যবরেটরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থকে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে তোলার প্রক্রিয়াকে রিসাইকেলিং বা পুনর্ব্যবহার বলে।
কাচ দ্রব্য পরিষ্কার করার জন্যে কী ব্যবহার করা হয়? একটি কাচ দ্রব্য পরিষ্কার হয়েছে কিনা তা কীভাবে বুঝবে?
ট্যাপের পানি, ক্রোমিক এসিড, পাতিত পানি দ্বারা কাচের পাত্র পরিষ্কার করা হয়। কাচের পাত্রে তেল চর্বি জাতীয় পদার্থ পরিষ্কার করতে ক্রোমিক এসিড ব্যবহার করা হয়। যন্ত্রপাতি পরিষ্কার হয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য পাত্রে তেল, চর্বি আছে কিনা তা লক্ষ্য করতে হবে। তাছাড়া যন্ত্রপাতি দেখতে ঘোলাটে হলে বুঝতে হবে পাত্র অপরিষ্কার। তাছাড়া যদি কোন পরীক্ষণে ফলাফল যদি কাঙ্খিত ফলাফল থেকে বিচ্যুত হয় তাহলে বুঝতে হবে পূর্বের পরীক্ষার অপদ্রব্য পাত্রে রয়ে গেছে।
সুতরাং পাত্রের পরিষ্কারকরণ খুব জরুরী।
ল্যাবরেটরিতে নিরাপত্তা সামগ্রী ও ব্যবহার বিধি
(Laboratory Safety tools and its safe use)
ল্যাবরেটরিতে কাজ করবার সময় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যেমন- কাপড়ে বা শরীরে এসিড লাগা, মুখমণ্ডলে বা চোখে এসিড পড়তে পারে, আগুনে পুড়ে যাওয়া, কাচের পাত্র ভেঙে কেটে যাওয়া, পরীক্ষানলে তাপ দেওয়ার সময় জাম্প করে রাসায়নিক দ্রব্য গায়ে বা চোখে মুখে পড়া, গবেষণাগারে আগুন লেগে যাওয়া ইত্যাদি। এ জাতীয় দুর্ঘটনা ঘটলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা তাৎক্ষিণিকভাবে নিতে হবেঃ
- প্রথমত এসিড বা ক্ষার পড়লে সঙ্গে সঙ্গে সেই স্থান সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। চোখে মুখে পড়লে প্রচুর পানি দিয়ে ধুতে হবে।
- কোনো স্থান কেটে গেলে সেই অংশ পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে শুকনা তুলা বা কাপড় দিয়ে মুছে এন্টিসেপটিক জাতীয় কিছু লাগাতে হবে। প্রয়োজনে ব্যান্ড এইড লাগানো যেতে পারে।
- ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত গ্যাসের ধোঁয়ায় (যেমন - HCl, H2Sইত্যাদি) শ্বাসকষ্ট বা অস্বস্তি বোধ করলে উন্মুক্ত স্থানে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়ে আসতে হবে অথবা ফ্যানের বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
- কোনো কারণে এসিড বা ক্ষার মুখের মধ্য দিয়ে পেটে গেলে প্রচুর পানি পান করাতে হবে। লেবুর রসও পান করানো যায়।
- কেবল এসিড পেটে গেলে MgCO3চুনের পানির সাথে মিশ্রিত করে পান করালে আক্রান্ত ব্যক্তি কিছুটা স্বস্তি বোধ করবে।
- পরীক্ষাগারে আগুন লেগে গেলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে এবং এ যন্ত্র ল্যাবরেটরির মধ্যে দেয়ালে বা ল্যাবরেরির বাইরের দেয়ালে রক্ষিত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে ছাত্র - শিক্ষক, গবেষণাগার পরিচালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা পূর্বেই করতে হবে। আগুন বেশি হলে দমকল বাহিনীকে খবর দিতে হবে।
- অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র কয়েক ধরনের রাখা উচিত। যেমন -
- জ্বলনশীল ধাতুর (Mg, Ti, Na, Li, K) মাধ্যমে আগুন লাগলে।
- জ্বালনশলি তরল, তেল, পেইন্ট বা থিনার ইত্যাদিতে আগুন লাগলে।
- জ্বলনশীল কাঠ, কাপড়, কাগজ, রবার, প্লাস্টিক ইত্যাদিতে আগুন লাগলে।
অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র |
প্রাথমিক চিকিৎসা ও ফার্স্ট এইড বক্স এর ব্যবহার বিধি
(First Aid and Use of First Aid Box)
পরীক্ষাগারে ব্যবহারিক ক্লাস করার সময় ছোট খাট দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। ল্যাবরেটরিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য এবং বিভিন্ন কাচের যন্ত্রপাতি হতে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এসব দুর্ঘটনা ঘটার সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার আগেই ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের জন্য তাৎক্ষণিক যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বলে।
ল্যাবরেটরির জন্য ফার্স্ট এই বক্সে (প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স) নিম্নলিখিত দ্রব্যগুলো থাকা আবশ্যকীয়ঃ
১। শুকনা তুলা ও ব্যান্ডেজ, কিছু ব্যান্ড এইড, ক্রসটেপ।
২। এন্টিসেপটিক জাতীয় যেমন- স্যাভলন বা ডেটল, টিংচার আয়োডিন।
৩। দুই তিন ধরনের ফোরসেফ।
৪। ক্ষত পরিষ্কার করার জন্য অ্যালকোহল বা এ জাতীয় অন্য কোনো পরিষ্কারক।
৫। ছোট কাঁচি এবং চাকু।
৬। ইনহেলার।
৭। পোভিডোন - আয়োডিন দ্রবণ।
৮। ব্যথা ও জ্বর উপশম জাতীয় ঔষধ, যেমন - প্যারাসিটামল, এসপিরিন ইত্যাদি।
৯। অ্যান্টিবায়োটিক পাউডার বা ক্রিম, যেমন - নেবানল পাউডার বা ক্রিম।
১০। বার্নল (Burnol), বোরিক এসিড, ভেসলিন ইত্যাদি।
ব্যবহার বিধি
১) কাচে বা অন্য কিছুতে হাত বা পা কেটে গেলে ক্ষতস্থানটি পরিষ্কার পানি বা অ্যালকোহল দিয়ে পরিষ্কার করে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ব্যান্ড এই লাগানো যায় অথবা স্যাভলন দিয়ে ব্যান্ডেজ করে রাখতে হবে। ক্ষত বেশি হলে অ্যান্টিবায়োটিক পাউডার বা ক্রিম দিয়ে ব্যান্ডেজ করতে হবে।
২) ক্ষতস্থানে কাচের টুকরা ঢুকে গেলে তা ফোরসেফ দিয়ে বের করে এনে পরিষ্কার করে মুছে অ্যান্টিবায়োটিক পাউডার বা ক্রিম দিয়ে ব্যান্ডেজ করতে হবে।
৩) কোনো স্থান পুড়ে গেলে অ্যালকোহল দিয়ে পরিষ্কার করে পিকরিক এসিড দ্রবণ ব্যবহার করা যায় অথবা বার্নল লাগানো যায়। বর্তমানে গরম পানিতে পুড়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধৌত করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।
৪) সামান্য কেটে গেলে হেক্সাসোল বা পোভিডোন - আয়োডিন দ্রবণের সাহায্যে পরিষ্কার করে ব্যান্ড এইড লাগিয়ে দেওয়া যায়।
প্রাথমিক চিকিৎসা ও ফার্স্ট এইড বক্স এর ব্যবহার বিধি
(First Aid and Use of First Aid Box)
পরীক্ষাগারে ব্যবহারিক ক্লাস করার সময় ছোট খাট দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। ল্যাবরেটরিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য এবং বিভিন্ন কাচের যন্ত্রপাতি হতে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এসব দুর্ঘটনা ঘটার সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার আগেই ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের জন্য তাৎক্ষণিক যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বলে।
ল্যাবরেটরির জন্য ফার্স্ট এই বক্সে (প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স) নিম্নলিখিত দ্রব্যগুলো থাকা আবশ্যকীয়ঃ
১। শুকনা তুলা ও ব্যান্ডেজ, কিছু ব্যান্ড এইড, ক্রসটেপ।
২। এন্টিসেপটিক জাতীয় যেমন- স্যাভলন বা ডেটল, টিংচার আয়োডিন।
৩। দুই তিন ধরনের ফোরসেফ।
৪। ক্ষত পরিষ্কার করার জন্য অ্যালকোহল বা এ জাতীয় অন্য কোনো পরিষ্কারক।
৫। ছোট কাঁচি এবং চাকু।
৬। ইনহেলার।
৭। পোভিডোন - আয়োডিন দ্রবণ।
৮। ব্যথা ও জ্বর উপশম জাতীয় ঔষধ, যেমন - প্যারাসিটামল, এসপিরিন ইত্যাদি।
৯। অ্যান্টিবায়োটিক পাউডার বা ক্রিম, যেমন - নেবানল পাউডার বা ক্রিম।
১০। বার্নল (Burnol), বোরিক এসিড, ভেসলিন ইত্যাদি।
ব্যবহার বিধি
১) কাচে বা অন্য কিছুতে হাত বা পা কেটে গেলে ক্ষতস্থানটি পরিষ্কার পানি বা অ্যালকোহল দিয়ে পরিষ্কার করে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ব্যান্ড এই লাগানো যায় অথবা স্যাভলন দিয়ে ব্যান্ডেজ করে রাখতে হবে। ক্ষত বেশি হলে অ্যান্টিবায়োটিক পাউডার বা ক্রিম দিয়ে ব্যান্ডেজ করতে হবে।
২) ক্ষতস্থানে কাচের টুকরা ঢুকে গেলে তা ফোরসেফ দিয়ে বের করে এনে পরিষ্কার করে মুছে অ্যান্টিবায়োটিক পাউডার বা ক্রিম দিয়ে ব্যান্ডেজ করতে হবে।
৩) কোনো স্থান পুড়ে গেলে অ্যালকোহল দিয়ে পরিষ্কার করে পিকরিক এসিড দ্রবণ ব্যবহার করা যায় অথবা বার্নল লাগানো যায়। বর্তমানে গরম পানিতে পুড়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধৌত করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।
৪) সামান্য কেটে গেলে হেক্সাসোল বা পোভিডোন - আয়োডিন দ্রবণের সাহায্যে পরিষ্কার করে ব্যান্ড এইড লাগিয়ে দেওয়া যায়।
ল্যাবরেটরি ব্যবহার বিধি : পোষাক, নিরাপদ গ্যাস, মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস
আমরা জানবো -
- ল্যাবরেটরির ব্যবহার বিধি
- ল্যাবরেটরিতে পোশাক পরিধানের সঠিক নিয়ম
- ল্যাবরেটরিতে গ্লাস, মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার বিধি
১. পোশাক
ল্যাবরেটরিতে কখনোই ঢিলেঢালা জামাকাপড় ব্যবহার করা উচিত নয়। ল্যাবরেটরিতে প্রবেশের আগে ছাত্রছাত্রীদের সাদা অ্যাপ্রন (Apron) পরতে হবে। রাসায়নিক দ্রব্য দ্বারা যাতে জামা কাপড় নষ্ট না হয় সেজন্য অ্যাপ্রন পরা জরুরি। এছাড়াও অ্যাপ্রন পরিধানে ল্যাবরেটরিতে কাজ করার জন্য শিক্ষার্থীরা মানসিক প্রস্তুতি লাভ করে। ছাত্রীরা প্রয়োজনে চুল বেঁধে মাথায় স্কার্ফ পরতে পারে।
২. নিরাপদ গ্লাস
চোখ মানুষের মূল্যবান সম্পদ। তাই চোখের সুরক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে নিরাপদ গ্লাস ব্যবহার করা উচিত। বিকারক বা রিয়াজেন্ট টেস্টটিউবে নিয়ে উত্তপ্ত করার সময় অনেক সময় তীব্র বেগে টেস্টটিউব থেকে বেরিয়ে আসে। উত্তপ্ত এবং তীব্র বেগে বেরিয়ে আসা রিয়েজেন্ট কোনোভাবে চোখে পড়লে মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে চোখে গ্লাস ব্যবহার করলে এরূপ দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। গ্লাসের ফাঁক দিয়ে যেন গ্যাসীয় পদার্থ প্রবেশ করতে না পারে এজন্য গ্লাসের পার্শ্ব দিয়ে প্লাস্টিক লাগানো নিরাপত্তা গ্লাস ব্যবহার করা উত্তম।
৩. মাস্ক
ল্যাবরেটরিতে কোনো কোনো পরীক্ষায় মারাত্মক বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস নির্গত হয়। কোনোভাবে এসব গ্যাস নাসিকা দ্বারা ভিতরে প্রবেশ করলে মাথাব্যথা, বমি হওয়া, শ্বাসকষ্ট, চোখে পানি আসা, চোখ লাল হওয়া এমনকি শিক্ষার্থী অনেক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারে। এসব দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য মাস্ক ব্যবহার করা খুবই প্রয়োজন। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা কার্য পরিচালনার সময় সাধারণত H2S, SO2, NO2, CO2, NH3, Cl2 প্রভৃতি গ্যাস উৎপন্ন হয়। এ গ্যাসগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব বিদ্যমান। মাস্ক ব্যবহার করলে এসব গ্যাসের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৪. হ্যান্ড গ্লাভস
ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থগুলোর বেশির ভাগই হাতে, গায়ে বা চামড়ায় লাগলে ক্ষতিসাধন করে। এসব রাসায়নিক দ্রব্য খালি হাতে স্পর্শ করা ঠিক না। এজন্য ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময় হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করা দরকার। এছাড়া রিয়াজেন্ট বোতলের ছিপি খুলতে বা আটকানোর ক্ষেত্রে হাতে গ্লাভস পরে নিতে হবে। ভাঙা কাচের টুকরা, ব্যবহৃত ফিল্টার পেপার, ব্যুরেট, পিপেট, ইত্যাদি খালি হাতে না ধরে গ্লাভস পরা অবস্থায় ব্যবহার করা উত্তম।
গ্লাভসে কোনো ছিদ্র বা ছেঁড়া আছে কি না তা দেখে ব্যবহার করতে হবে। হাত থেকে গ্লাভস খোলার সময় হাতের কবজির দিক থেকে টেনে খুলতে হয়। গ্লাভস খোলার সময় বা ব্যবহারের সময় গ্লাভসে লেগে থাকা রাসায়নিক বস্তু যেন শরীরের ত্বকের সংস্পর্শে না আসে তা খেয়াল রাখতে হবে। ব্যবহার অনুপযোগী বা সংক্রমিত গ্লাভস নির্ধারিত বর্জ্য পাত্রে ফেলতে হবে। গ্লাভস খোলার পর ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
মৃদু ক্ষয়কারী পদার্থ, অস্বস্তিকর জ্বালা সৃষ্টিকারী পদার্থ, বৈদ্যুতিক শক্ থেকে রক্ষার জন্য PVC গ্লাভস বা ল্যাটেক্স গ্লাভস বা নিওপ্রিন গ্লাভস ব্যবহার করা হয়। শিখা পরীক্ষার মতো ছোটখাটো জ্বলন্ত বস্তু নিয়ে কাজ করার সময় জিটেক্স গ্লাভস ব্যবহার করা ভালো। এক্ষেত্রে ক্যান্সার সৃষ্টির বৈশিষ্ট্যের কারণে অ্যাসবেস্টসের গ্লাভস বর্তমানে ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত হয় না।
এছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানা জরুরি -
- বিপজ্জনক বস্তু (গাঢ় H2SO4, গাঢ় HNO3, TNT, তীব্র ক্ষার), দাহ্য বস্তু (বেনজিন, পেট্রোল, স্পিরিট), বিষাক্ত গ্যাস (H2S, HCN, Hg, NH3, Cl2) প্রভৃতি নিয়ে কাজ করার সময় শিক্ষকের পরামর্শ বা উপস্থিতি জরুরি।
- আগুন দিয়ে তাপ দেওয়ার সময় উদ্বায়ী, দাহ্য বস্তুসমূহ সেখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। এসব রাসায়নিক বস্তু নিয়ে কাজ করার সময় আগুনের ব্যবহার বিপজ্জনক এবং দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
- ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, নেট চালানো, গল্প করা থেকে বিরত থাকা উচিত। তা না হলে অমনোযোগিতা বা অসাবধানতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
- অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের অবস্থান ও ব্যবহার প্রত্যেকের জেনে রাখতে হবে।
- ফাস্ট এইড বক্সের অবস্থান ও ব্যবহার জেনে রাখতে হবে।
- শিক্ষকের পরামর্শ ও নির্দেশনা ব্যতিরেকে অযথা খেয়ালের বশে কোনো পরীক্ষা করা, বিক্রিয়া ঘটানো, লেবেল ছাড়া কোনো বিকারকের আনুমানিক ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
- সংরক্ষিত বিকারক বোতল প্রয়োজনীয় কাজ শেষে নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে। বিকারক বোতল থেকে অতিরিক্ত বিকারক নিয়ে পরে অব্যবহৃত বিকারক পুনরায় বোতলে ঢেলে রাখা বা পরিত্যাগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- ল্যাবরেটরি ব্যবহার বিধি : পোশাক, নিরাপদ গ্লাস, মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার
- গ্লাস সামগ্রী ব্যবহারের নিরাপদ কৌশল
- ল্যাবরেটরি, যন্ত্রপাতি ও গ্লাস সামগ্রী পরিষ্কার করার কৌশল
- ল্যাবরেটরিতে যন্ত্রপাতি যথাযথ সংরক্ষণ ও ব্যবহার: ব্যালেন্স ব্যবহার বিধি
- রাসায়নিক ব্যালেন্স ব্যবহার
- রাসায়নিক নিক্তি
- ইলেকট্রনিক ডিজিটাল ব্যালেন্স
- রাসায়নিক বিশ্লেষণ ও কাঁচের সামগ্রী ব্যবহার বিধি
- বিকার
- আয়তনিক ফ্লাস্ক
- মাপন সিলিন্ডার
- পিপেট
- ব্যুরেট
- কনিক্যাল ফ্লাস্ক
- ধৌতকরণ বোতল
- ফানেল
- টাইট্রেশন প্রক্রিয়ায় কাঁচ সামগ্রীর যথাযথ ব্যবহার
- দ্রবণ প্রস্তুতির প্রত্যক্ষ পদ্ধতি
- প্রমাণ দ্রবণ
- দ্রবণ প্রস্তুতির পরোক্ষ পদ্ধতি
- ট্রাইট্রেশন
- ল্যাবরেটরীতে তাপ দেওয়ার কৌশল
- অনুজ্জ্বল শিখা
- উজ্জ্বল শিখা
- টেস্টটিউবে উত্তপ্তকরণ
- বিকার কনিকেল ফ্লাস্ক ও পোরসেলিন বাটিতে তাপ প্রদান
- গোলতলী ফ্লাস্কে তাপ
- পানি গাহে তাপ
- রিয়েজেন্ট বোতলের ব্যবহার কৌশল
- রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণ ও ব্যবহার সতর্কতা
- ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপদ সংরক্ষণ, ব্যবহার ও পরিত্যাগ
- পরিবেশের উপর ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যের প্রভাব ও পরিমিত ব্যবহারে ব্যবহারের গুরুত্ব
- সেমি-মাইক্রো ও অ্যানালিটিক্যাল পদ্ধতি
- ল্যাবরেটরিতে নিরাপত্তা সামগ্রী ও ব্যবহার বিধি
- প্রাথমিক চিকিৎসা ও ফার্স্ট এইড বক্স এর ব্যবহার বিধি