বিশেষণ কাকে বলে?
যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলে।
উদাহরণ:
- দোষ: “মন্দ ছেলে” বাক্যে “মন্দ” বিশেষণটি “ছেলে” বিশেষ্যটির দোষ প্রকাশ করছে।
- গুণ: “সুন্দর ফুল” বাক্যে “সুন্দর” বিশেষণটি “ফুল” বিশেষ্যটির গুণ প্রকাশ করছে।
- অবস্থা: “উঁচু পাহাড়” বাক্যে “উঁচু” বিশেষণটি “পাহাড়” বিশেষ্যটির অবস্থা প্রকাশ করছে।
- সংখ্যা: “দুই ভাই” বাক্যে “দুই” বিশেষণটি “ভাই” বিশেষ্যটির সংখ্যা প্রকাশ করছে।
- পরিমাণ: “অনেক টাকা” বাক্যে “অনেক” বিশেষণটি “টাকা” বিশেষ্যটির পরিমাণ প্রকাশ করছে।
বিশেষণ পদের শ্রেণীবিভাগ
বিশেষণ পদকে বিভিন্নভাবে শ্রেণীবিভাগ করা হয়। এর মধ্যে কয়েকটি প্রধান শ্রেণী হল:
- গুণবাচক বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ কোন বস্তু বা ব্যক্তির গুণ বা বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে, তাকে গুণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন: সুন্দর, লম্বা, ভালো, মন্দ, খারাপ, বুদ্ধিমান, নির্বোধ, ধনী, দরিদ্র ইত্যাদি।
- দোষবাচক বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ কোন বস্তু বা ব্যক্তির দোষ বা বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে, তাকে দোষবাচক বিশেষণ বলে। যেমন: কুৎসিত, খারাপ, মন্দ, নির্বোধ, বোকা, অশিক্ষিত, দরিদ্র ইত্যাদি।
- অবস্থাবাচক বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ কোন বস্তু বা ব্যক্তির অবস্থা বা অবস্থান প্রকাশ করে, তাকে অবস্থাবাচক বিশেষণ বলে। যেমন: উঁচু, নিচু, বড়, ছোট, স্থির, গতিশীল, শুষ্ক, ভেজা, ঠান্ডা, গরম ইত্যাদি।
- সংখ্যাবাচক বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ কোন বস্তু বা ব্যক্তির সংখ্যা প্রকাশ করে, তাকে সংখ্যাবাচক বিশেষণ বলে। যেমন: এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আট, নয়, দশ ইত্যাদি।
- পরিমাণবাচক বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ কোন বস্তু বা ব্যক্তির পরিমাণ প্রকাশ করে, তাকে পরিমাণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন: অনেক, অল্প, কম, বেশী, বেশি, কত, তত, এত, যত, বেশ ইত্যাদি।
বিশেষণ পদের পদক্রম
বাক্যে বিশেষণ পদের পদক্রম সাধারণত নিম্নরূপ:
- গুণবাচক বিশেষণ
- দোষবাচক বিশেষণ
- অবস্থাবাচক বিশেষণ
- সংখ্যাবাচক বিশেষণ
- পরিমাণবাচক বিশেষণ
বিশেষণ পদে রূপ পরিবর্তন
বিশেষণ পদে রূপ পরিবর্তন হয় মূলত সংখ্যাবাচক বিশেষণ এবং পরিমাণবাচক বিশেষণের ক্ষেত্রে। সংখ্যাবাচক বিশেষণের ক্ষেত্রে একবচন, দ্বিবচন এবং বহুবচন এই তিনটি রূপ হয়ে থাকে। পরিমাণবাচক বিশেষণের ক্ষেত্রে মাত্রা, তুলনা এবং অতিশায়নের ভিত্তিতে রূপ পরিবর্তন হয়।
বিশেষণ পদে সমাস
বিশেষণ পদে সমাস হয় মূলত গুণবাচক বিশেষণের ক্ষেত্রে। গুণবাচক বিশেষণ পদে অব্যয়ীভাব সমাস, দ্বন্দ্ব সমাস, কর্মধারয় সমাস, তৎপুরুষ সমাস এবং উপসর্গ সমাস এই পাঁচটি সমাস হয়ে থাকে।