হিমবাহ কাকে বলে?

শীতপ্রধান অঞ্চলে বরফ গলার চেয়ে জমার হার বেশি। এভাবে বরফ জমতে জমতে নিচের বরফ শক্ত হয়ে যায় এবং এর গভীরতার অনেক বেশি হয়ে গেলে আস্তে আস্তে চলতে শুরু করে। এ বিরাট আয়তনের চলন্ত বরফ স্তরকে হিমবাহ বলে।

উদাহরণঃ যমুনা নদী যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে সৃষ্টি হয়েছে।

হিমবাহের কাজ

পৃথিবীর দুই মেরু অঞ্চলে ও উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে অত্যধিক ঠান্ডা। এইসব অঞ্চলে তুষারক্ষেত্র ও হিমবাহ দেখা যায়। অত্যধিক শীতের জন্য পর্বতের উঁচু চুড়া ও মেরু অঞ্চলের বায়ুমন্ডলের জলীয়বাষ্প সারা বছর তুষারে জমে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহের প্রধান কাজ ভূমি ক্ষয় করা এবং ক্ষয়ীভূত শিলাচূর্ণ বহন করা। পার্বত্য অঞ্চল থেকে নামার পরে হিমবাহের প্রধান কাজ বাহিত শিলা চূর্ণ ও নুড়ি-পাথর জমা করা অর্থাৎ অবক্ষেপন বা সঞ্চয়।

হিমবাহের শ্রেণিবিভাগ

হিমবাহের প্রধানত তিন প্রকার। যথাঃ

১) উপত্যকা হিমবাহ বা পার্বত্য হিমবাহ

২) মহাদেশীয় হিমবাহ

৩) পাদদেশীয় হিমবাহ।

১) উপত্যকা হিমবাহ কাকে বলে?

উচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কিংবা অতি উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে প্রচন্ড ঠান্ডার জন্য তুষার জমে সৃষ্টি যেসব হিমবাহ পর্বতের উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং যেসব হিমবাহ তাদের গতি প্রবাহকে পার্বত্য উপত্যকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে, সেইসব হিমবাহকে পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ বলে।

২) মহাদেশীয় হিমবাহ কাকে বলে?

মহাদেশীয় বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে যে হিমবাহ অবস্থান করে তাকে মহাদেশীয় হিমবাহ বলে। সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চল জুড়ে যে বিরাট বরফের স্তর দেখা যায় তাকেই আসলে মহাদেশীয় হিমবাহ বলে।

৩) পাদদেশীয় হিমবাহ কাকে বলে?

হিমবাহ যখন উঁচু পর্বতের থেকে নেমে এসে পর্বতের পাদদেশে বিরাট অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে, তখন তাকে পাদদেশীয় হিমবাহ বলে।