প্রাকৃতিক পরিবেশে, সামাজিক পরিবেশ ও রাজনৈতিক পরিবেশ কাকে বলে?

পরিবেশের বিভিন্নরূপ

পরিবেশকে সাধারণত তিন ভাগ করা যায়। যেমন, 

ক) প্রাকৃতিক বা ভৌগলিক পরিবেশ

খ) সামাজিক পরিবেশ এবং 

গ) রাজনৈতিক পরিবেশ।

প্রাকৃতিক পরিবেশ কাকে বলে?

প্রাকৃতিক পরিবেশকে ভৌগলিক পরিবেশও বলা হয়। মানুষ তার চারদিকে প্রকৃতির সৃষ্টির বৈচিত্র্যের যে সমারোহ লক্ষ্য করে তা-ই প্রাকৃতিক পরিবেশ। প্রাকৃতিক পরিবেশ বলতে আমাদের চারপাশের ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী, সাগর-মহাসাগর, খাল-বিল, বন-জঙ্গল, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি সবকিছুর মিলিত বাহ্যিক রূপকে বুঝায়।

সামাজিক পরিবেশ কাকে বলে?

সমাজে বসবাসরত মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে এমনসব উপাদানের (জনসংখ্যা, শিক্ষাব্যবস্থা, বেকারত্ব, জাতীয়তা, রীতিনীতি প্রভৃতি) সমষ্টি হল সামাজিক পরিবেশ।

সামাজিক পরিবেশ বলতে সংঘবদ্ধ মানুষের বহুমুখী জীবনের সমষ্টিগত রূপ ও অবস্থাকে বুঝায়। জীবন বিকাশের তাগিদে, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক ইত্যাদি বিষয়ে মানুষ যে পারিপার্শ্বিক সম্পর্ক ও সংগঠন রচনা করে তাকে সামাজিক পরিবেশ বলে।

ক্লাব, সমিতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মন্দির, মসজিদ, গীর্জা, নাট্যসমিতি, সাহিত্য ও বিতর্কসভা, লেখক সমিতি ইত্যাদি সামাজিক পরিবেশের উপাদান। সভ্য জীবন যাপনের জন্য সামাজিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সরবরাহ করে।

সামাজিক পরিবেশের উপাদানগুলোর প্রতি লক্ষ রেখে ব্যবসায়ের বিভিন্ন ধরন নির্বাচন করা হয়। মূলত সমাজের মানুষের রুচি অনুযায়ী চাহিদা পূরণের মাধ্যমে ব্যবসায় টিকে থাকে। তাই এর সম্প্রসারণে সামাজিক উপাদানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেমন : টাঙ্গাইলের চমচম ও তাঁতের শাড়ি, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশীয় পন্যের (শাড়ি, পিঠা প্রভৃতি) ব্যবসায়।

রাজনৈতিক পরিবেশ কাকে বলে?

কোন দেশের সার্বভৌমত্ব, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক দলের নীতিমালা, তাদের নেতৃত্ব, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রভৃতির সমন্বয়ে গঠিত পরিবেশ হলো রাজনৈতিক পরিবেশ।

রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা, রাজনীতিতে অংশ গ্রহণের ধরন, ক্ষমতার ব্যবহার, বিরোধীতার প্রকৃতি ক্ষমতাহীন ও বিরোধীদের সম্পর্কের প্রকৃতি, নির্বাচন পদ্ধতি, নির্বাচকমন্ডলীর আচরণ, বিদ্যমান স্থানীয় ও জাতীয় সরকার ও সংগঠনের সাথে নাগরিকদের সম্পর্কের ধরন, ক্ষমতা চর্চার রীতি ইত্যাদির সমন্বিত রূপকে রাজনৈতিক পরিবেশ বলে।