বেগ কাকে বলে?

নির্দিষ্ট দিকে সময়ের সাথে কোনো বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনের হারকে বেগ বলে।

অনেক সময় আমরা সাধারণ কথাবার্তায় বেগ শব্দ ব্যবহার করি এবং অনেকে তা করে থাকি দ্রুতি বুঝাতে। কিন্তু বিজ্ঞানের পরিভাষায় শব্দ দুটির অর্থে ভিন্নতা আছে। দ্রুতি কেবল কোনো বস্তুর দূরত্বের বা অবস্থানের পরিবর্তনের হার নির্দেশ করে, কোন দিকে সে পরিবর্তন হয়েছে তা বুঝায় না।

বেগ দূরত্বের পরিবর্তনের হার বুঝাবার পাশাপাশি কোন দিকে সে পরিবর্তন ঘটে তাও নির্দেশ করে। বেগ দিয়ে নির্দিষ্ট দিকে দূরত্বের পরিবর্তনের হার তথা সরণের হারকে বুঝায়। 

সুতরাং সময়ের সাথে কোনো বস্তুর সরণের হারকে বেগ বলে। 

অর্থাৎ বস্তু নির্দিষ্ট দিকে একক সময়ে যে পথ অতিক্রম করে তাই বেগ।

যদি কোনো বস্তু t সময়ে নির্দিষ্ট দূরত্ব s দূরত্ব অতিক্রম করে 

তাহলে বেগ, v = s / t

বেগের মাত্রা হলো = LT-1

বেগের একক হলো = ms-1

বেগের মান ও দিক দুটোই আছে। তাই বেগ একটি ভেক্টর রাশি।

উদাহরণ হিসেবে একটি রাস্তার কথা ধরা যাক। রাস্তাটি কোনো স্থানে পূর্ব দিকের সাথে 30° কোণ করে উত্তর দিকে চলে গেছে। সেই রাস্তায় যদি একটি গাড়ি 20 kmh-1 সমদ্রুতিতে চলে, তাহলে আমরা সঠিকভাবে বলতে পারব গাড়ির বেগ পূর্ব দিকের সাথে 30 কোণে উত্তর দিকে 20 kmh-1। কিন্তু যদি এই গাড়িটিই একটি বৃত্তাকার পথে 20 kmh-1 সমদ্রুতিতেই চলে, তাহলে তার গতির দিক ক্রমাগত পরিবর্তন হবে।

সুতরাং এর বেগও ক্রমাগত পরিবর্তন হবে যদিও এর দ্রুতি সবসময় একই থাকবে। বস্তুর বেগের মানই তার দ্রুতি। নির্দিষ্ট দিকে বস্তুর দ্রুতিই তার বেগ।

যদি গতিশীল কোনো বস্তুর বেগের মান ও দিক অপরিবর্তিত থাকে তাহলে সেই বস্তুর বেগকে সুষমবেগ বা সমবেগ বলে। শব্দের বেগ সুষমবেগর একটি প্রকৃষ্ট প্রাকৃতিক উদাহরণ। শব্দ নির্দিষ্ট মাধ্যমে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট দিকে সমান সময়ে সমান পথ অতিক্রম করে, আর তা হচ্ছে 0°C তাপমাত্রায় বায়ুতে প্রতি সেকেন্ডে 332 মিটার। শব্দ কোনো নির্দিষ্ট দিকে প্রথম সেকেন্ডে 332 মিটার, দ্বিতীয় সেকেন্ডে 332 মিটার এবং এইরূপ প্রতি সেকেন্ডে 332 মিটার করে চলতে থাকে। এখানে শব্দের বেগের মান ও দিক একই থাকায় শব্দের বেগ 332 ms-1 হলো সুষমবেগ।

কোনো বস্তুর যদি গতিকালে তার বেগের মান বা দিক বা উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে তাহলে বুস্তুর সেই বেগকে অসম বেগ বলে। অর্থাৎ কোনো বস্তু যদি সমান সময়ে, সমান দূরত্ব অতিক্রম না করে কিংবা চলার সময় গতির দিক পরিবর্তন করে তাহলে সেই বেগ অসমবেগ হবে। আমরা যে চলাফেরা করি, গাড়ি চলে ইত্যাদির বেগ সাধারণত অসমবেগ।