হিসাব বিজ্ঞান কাকে বলে?

হিসাববিজ্ঞান কাকে বলে?

হিসাববিজ্ঞান এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আর্থিক কার্যাবলি যেমন- খরচ পরিশোধন, আয় আদায়, সম্পদ ক্রয় ও বিক্রয়, পণ্য ক্রয় ও বিক্রয়, দেনাদার হতে আদায় এবং পাওনাদারকে পরিশোধ ইত্যাদি হিসাবের বইতে সুষ্ঠুভাবে লিপিবদ্ধ করা যায় এবং নির্দিষ্ট সময় শেষে আর্থিক কার্যাবলির ফলাফল জানা যায়। 

হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে ব্যবসায়ের আর্থিক লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ, শ্রেণিবদ্ধকরণ, ব্যাখ্যাকরণের পদ্ধতি আলোচনা করা হয়। এর ফলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন নির্ণয় করা যাবে এবং এসব তথ্যাবলি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করবে। হিসাববিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহার করে হিসাবের বিভিন্ন বিবরণী ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা জানা যায়। তাই হিসাববিজ্ঞানকে ‘ব্যবসায়ের ভাষা’ বলা হয়। 

হিসাববিজ্ঞানের মাধ্যমে আর্থিক ঘটনাসমূহ হিসাবের নির্দিষ্ট বইতে যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ, শ্রেণিবদ্ধ ও বিশ্লেষণ করে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা নিরূপণ করা যায়।

হিসাববিজ্ঞানের জনক কে?

হিসাববিজ্ঞানের জনক হলেন লুকা প্যাসিওলি।

হিসাববিজ্ঞানের স্বর্ণসূত্র কি?

ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে যা সস্পষ্ট ও যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়। এই নিয়মসমূহকে ডেবিট ও ক্রেডিটের স্বর্ণসূত্র (Golden Rules) বলে।

সূত্র বা নিয়মগুলো হলোঃ

ক) ব্যক্তিবাচক হিসাব (Personal Account): কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে লেনদেন হলে যদি ঐ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সুবিধা গ্রহণ করে তাহলে ডেবিট আর যদি সুবিধা প্রদান করে তাহলে ক্রেডিট।

খ) সম্পত্তিবাচক হিসাব (Real Account): লেনদেনের মাধ্যমে ব্যবসায়ে কোন সম্পত্তি আসলে উক্ত হিসাব ডেবিট এবং কোন সম্পত্তি ব্যবসায় থেকে চলে গেলে তা ক্রেডিট হবে।

গ) নামিক হিসাব (Nominal Account): ব্যবসায়ের সমস্ত ব্যয়, খরচ বা ক্ষতি সংক্রান্ত হিসাব ডেবিট এবং আয় বা লাভ সংক্রান্তহিসাব ক্রেডিট হবে।

হিসাববিজ্ঞান কত প্রকার?

হিসাববিজ্ঞান শ্রেণিবিভাগ করার দুটি প্রধান পদ্ধতি হলোঃ ক) সনাতন পদ্ধতি খ) আধুনিক পদ্ধতি।

ক) সনাতন পদ্ধতিতে হিসাববিজ্ঞান ২ প্রকার। যথাঃ

১) ব্যক্তিবাচক হিসাব (Personal Account)

২) অ-ব্যক্তিবাচক হিসাব (Non-Personal Account)

আবার, অ-ব্যক্তিবাচক হিসাব ২ প্রকার। যথাঃ

i. সম্পত্তিবাচক হিসাব (Property Account)

ii. নামিক হিসাব (Nominal Account)

খ) আধুনিক পদ্ধতিতে হিসাববিজ্ঞান ৫ প্রকার। যথাঃ

১) সম্পদ হিসাব (Assets Account)

২) দায় হিসাব (Liabilities Account)

৩) মালিকানাস্বত্ব হিসাব (Owner’s Account)

৪) আয় হিসাব (Revenue Account)

৫) ব্যয় হিসাব (Expense Account)