বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা কি? তাৎপর্য ও সীমাবদ্ধতা

বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা কি?

জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রণীত কোনো আইন, বিধি বা অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী বিভাগের কোনো কাজকর্ম সংবিধান-বহির্ভূত কি না বা মৌলিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে কি না, সুপ্রিম কোর্টের পর্যালোচনাকে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা বলে।

বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার ক্ষমতা সাংবিধানিক সুদ্ধতা রক্ষায় যেকোনো দেশের বিচারালয়ের এক অনন্য ক্ষমতা। বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্ট ১৯৭২ সালে এ ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়। এ ক্ষমতার বলে জাতীয় সংসদ প্রণীত যেকোনো আইন সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা সুপ্রীম কোর্ট পর্যালোচনা করতে পারে। উক্ত পর্যালোচনায় কোনো আইন সংবিধান পরিপন্থী হলে সুপ্রীম কোর্ট তা বাতিলকরার ক্ষমতা রাখে। এ ক্ষমতা ব্যবহার করেই তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় দিয়েছে সুপ্রীম কোর্ট। আবার এ ক্ষমতার বলেই সুপ্রীম কোর্ট পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে।

বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার তাৎপর্য

  • বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনকে বৈধতা প্রদান করে দেশের সর্বোচ্চ আইনগত স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপ্রীমকোর্ট বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা পরিচালনা করে থাকে।
  • বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা সংসদীয় সার্বভৌত্বকে নিজস্ব সীমাবদ্ধতার থেকে কাজ করতে সাহায্য করে। এটি পার্লামেন্টের সংশোধনী ক্ষমতা এবং সাংবিধানিক ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করে।
  • উপজেলা পরিষদ অধ্যাদেশ বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার প্রয়োগের ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকার বিভিন্ন প্রশাসনিক শাখায় বিভক্তকরণের নির্দেশ দেয়া হয়।
  • বিচার বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলাকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম উপায় হিসেব ধরা হয়।

বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার সীমাবদ্ধতা

  • সংসদে স্পীকার কর্তৃক যদি কোন বিলকে অর্থ বিল হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে সে বিষয়ে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না।
  • তফসিলের আইনের সংশোধনীর এখতিয়ার গণপরিষদের।
  • সংসদের কার্যধারার বৈধতা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।

Leave a Comment