তড়িৎ চুম্বক কাকে বলে? উদাহরণ, বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার

তড়িৎ চুম্বক কাকে বলে?

বৈদ্যুতিক প্রক্রিয়ায় চুম্বকীয়করণের সময় চুম্বক পদার্থটি যদি কাঁচা লোহা হয় তবে, যতক্ষণ তড়িৎ প্রবাহিত হয় ততক্ষণ চুম্বক থাকে, তড়িৎ বন্ধ হলে চুম্বকত্ব নষ্ট হয়ে যায়। এ রকম চুম্বককে তড়িৎ চুম্বক বলে।

তড়িৎ চুম্বকের উদাহরণ

বৈদ্যুতিক মোটর, জেনারেটর, লাউডস্পিকার, হার্ড ডিস্ক, এমআরআই মেশিন, রিলে, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্রেন, ম্যাগনেটিক ট্রেন ইত্যাদি।

তড়িৎ চুম্বকের বৈশিষ্ট্য

তড়িৎ চুম্বক একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র যা বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে চৌম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি করে। তড়িৎ চুম্বকের কিছু মূল বৈশিষ্ট্য নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

  • বিদ্যুৎ প্রবাহের উপর নির্ভরশীল: তড়িৎ চুম্বকের চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তি এবং দিক বিদ্যুৎ প্রবাহের মান এবং দিকের উপর নির্ভর করে। বিদ্যুৎ প্রবাহ যত বেশি হবে, চৌম্বক ক্ষেত্র তত শক্তিশালী হবে।
  • চুম্বকীয় ক্ষেত্রের দিক পরিবর্তন: বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক পরিবর্তন করলে চুম্বকীয় ক্ষেত্রের দিকও পরিবর্তিত হয়।
  • চুম্বকীয় ক্ষেত্রের শক্তি নিয়ন্ত্রণ: কুণ্ডলীর ফেরতের সংখ্যা এবং কুণ্ডলীর মধ্যে কোর ব্যবহার করে চুম্বকীয় ক্ষেত্রের শক্তি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  • স্থায়ী চুম্বক নয়: তড়িৎ চুম্বক স্থায়ী চুম্বক নয়। বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হলে চৌম্বক ক্ষেত্র অদৃশ্য হয়ে যায়।
  • অস্থায়ী চৌম্বকত্ব: তড়িৎ চুম্বকের চৌম্বকত্ব অস্থায়ী। বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু থাকা অবস্থায়ই এটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে।
  • বিভিন্ন আকার ও আকৃতি: তড়িৎ চুম্বককে বিভিন্ন আকার ও আকৃতির করে তৈরি করা যায়।
  • উচ্চ তাপমাত্রায় ক্ষয়: অতিরিক্ত তাপমাত্রা তড়িৎ চুম্বকের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
  • বিভিন্ন কাজে ব্যবহার: তড়িৎ চুম্বক মোটর, জেনারেটর, ট্রান্সফর্মার, বেল, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্রেন ইত্যাদি বিভিন্ন যন্ত্রে ব্যবহৃত হয়।
  • সহজে পরিচালনা: তড়িৎ চুম্বককে সহজে পরিচালনা করা যায়।
  • পরিবেশবান্ধব: সঠিকভাবে ব্যবহার করলে তড়িৎ চুম্বক পরিবেশবান্ধব।

তড়িৎ চুম্বকের ব্যবহার

তড়িৎ চুম্বকের ব্যবহার অসংখ্য। এগুলি ব্যবহৃত হয়:

  • মোটর, জেনারেটর, ক্রেন ইত্যাদি তৈরিতে।
  • রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন, ফ্যান ইত্যাদি যন্ত্রপাতিতে।
  • কম্পিউটার এর যন্ত্রাংশ হার্ড ডিস্ক, ফ্লপি ডিস্ক ইত্যাদিতে।
  • যোগাযোগ ব্যবস্থায় যেমন: টেলিফোন, টেলিগ্রাফ ইত্যাদিতে।
  • চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিভিন্ন যন্ত্র যেমন: এমআরআই, ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম ইত্যাদি যন্ত্র তৈরিতে।