খনিজ কাকে বলে?
কতগুলো মৌলিক উপাদান প্রাকৃতিক উপায়ে মিলিত হয়ে যে যৌগিক পদার্থের সৃষ্টি করে তাকে খনিজ বলে। অর্থাৎ খনিজ হলো দুই বা ততোধিক মৌলের সমন্বয়।
অন্যভাবে বলা যায়, ভূ-পৃষ্ঠে নানা প্রকার রাসায়নিক মৌলিক উপাদান একত্রে মিলিত হয়ে যে যৌগিক পদার্থের সৃষ্টি করে, এগুলো খনিজ ।
তবে কিছু কিছু খনিজ একটি মাত্র মৌল দ্বারাও গঠিত হতে পারে। যেমন- হীরা, সোনা, তামা, রূপা, পারদ ও গন্ধক। এর মধ্যে হীরার কাঠিন্য (Hardness) সবচেয়ে বেশি এবং টেলক এর কাঠিন্য সর্বনিম্ন।
খনিজের বৈশিষ্ট্য
খনিজের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ –
১। প্রত্যেকটি খনিজের রাসায়নিক সংকেত ও সংস্থিতি আছে। এটি খনিজের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।
২। খনিজের সুনির্দিষ্ট ভৌত ধর্ম আছে।
৩। খনিজ প্রাকৃতিকভাবে গঠিত একটি অজৈব পদার্থ বিশেষ।
৪। প্রতিটি খনিজের সুনির্দিষ্ট গুণাবলী বিদ্যমান।
৫। খনিজের গায়ে দাগ বা আঁচড় প্রতিরোধক ক্ষমতা হলো কাঠিন্য। খনিজের বৈশিষ্ট্য নিরূপণে কাঠিন্যেও ভূমিকা রয়েছে।
৬। খনিজের আপেক্ষিক গুরুত্ব হলো খনিজের ওজনের তুলনায় একই আয়তনের পানির ওজনের অনুপাত। বেশিরভাগ খনিজের আপেক্ষিক গুরুত্বের মান ২.৫৬-৩.৩৭।
৭। খনিজের ফাটল খনিজ নির্ণয়ে খুবই উপযোগী। ফাটলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সূ², অসম, দাঁতাল, বন্ধুর ইত্যাদি।
৮। খনিজের পৃষ্ঠ থেকে আলোর প্রতিফলন মাত্রার উপর ঔজ্জ্বল্য নির্ভর করে।
৯। খনিজ ভেঙ্গে সমভঙ্গুর, ভাঁজভঙ্গুর, সঙ্কাকৃতি ইত্যাদি ধরনের হয়ে থাকে।
১০। বেশিরভাগ খনিজের আকার স্ফটিকাকার।
১১। খনিজের স্বাদ ও গন্ধ আছে। সেটা লবণের মত অথবা রসুনের মত গন্ধযুক্ত হতে পারে।
১২। কেলাস রূপ হচ্ছে খনিজের বাহ্যিকরূপ, যা মূলত পরমাণুর ভিতরের সুবিন্যস্ত আয়োজন প্রকাশ করে।
১৩। খনিজ সহজেই রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।
১৪। খনিজ সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না।
খনিজের গুরুত্ব
১. মৃত্তিকার প্রাথমিক উৎস হচ্ছে খনিজ।
২. কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় পলির উৎস।
৩. খনিজ পদার্থ মৃত্তিকার উর্বরতা ও পুষ্টির ভান্ডার হিসাবে কাজ করে।
৪. বায়ুমন্ডলের গ্যাসীয় পদার্থের প্রধান উৎস।
খনিজের প্রকারভেদ
ভৌত অবস্থা বিবেচনা করে খনিজকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
১. কঠিন
২. তরল এবং
৩. বায়বীয়।