বাক্যে ব্যবহৃত পদগুলির মধ্যে যে পদগুলি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত থাকে, সেগুলিকে লিপ্ত পদ বলে। অর্থাৎ, যে পদগুলি পরস্পরকে ব্যাকরণিকভাবে বা অর্থগতভাবে সম্পৃক্ত করে, সেগুলিকে লিপ্ত পদ বলে।
লিপ্ত পদগুলির মধ্যে সাধারণত নিম্নলিখিত সম্পর্কগুলি দেখা যায়:
- কর্তা-কর্ম সম্পর্ক: যে পদ কোন কাজ সম্পাদন করে, তাকে কর্তা বলে। আর যে পদ সেই কাজের সম্পাদনের ফলে পরিবর্তিত হয়, তাকে কর্ম বলে। যেমন, “ছাত্ররা বই পড়ছে” বাক্যে “ছাত্ররা” কর্তা এবং “পড়ছে” কর্ম।
- বিশেষ্য-বিশেষণ সম্পর্ক: যে পদ কোন বিশেষ্যকে বিশেষিত করে, তাকে বিশেষণ বলে। যেমন, “লাল ফুল” বাক্যে “লাল” বিশেষণ এবং “ফুল” বিশেষ্য।
- সম্পর্ক-সম্পর্কিত সম্পর্ক: যে পদ কোন সম্পর্ককে নির্দেশ করে, তাকে সম্পর্ক বলে। আর যে পদ সেই সম্পর্কের সাথে জড়িত, তাকে সম্পর্কিত বলে। যেমন, “আমার বাড়ি” বাক্যে “আমার” সম্পর্ক এবং “বাড়ি” সম্পর্কিত।
- কারক-ক্রিয়া সম্পর্ক: যে পদ কোন ক্রিয়াকে নির্দেশ করে, তাকে কারক বলে। আর যে পদ সেই কারকে নির্দেশ করে, তাকে ক্রিয়া বলে। যেমন, “ছাত্ররা বই পড়ছে” বাক্যে “ছাত্ররা” কারক এবং “পড়ছে” ক্রিয়া।
- ভোক্তা-ভুক্ত সম্পর্ক: যে পদ কোন ভোক্তার অধিকারে থাকে, তাকে ভোক্তা বলে। আর যে পদ সেই ভোক্তার অধিকারভুক্ত, তাকে ভুক্ত বলে। যেমন, “ছাত্রদের বই” বাক্যে “ছাত্ররা” ভোক্তা এবং “বই” ভুক্ত।
লিপ্ত পদগুলির মধ্যে সম্পর্কগুলিকে ব্যাকরণিকভাবে বা অর্থগতভাবে প্রকাশ করার জন্য বিভিন্ন প্রকার বিভক্তি, ক্রিয়াপদ এবং অন্যান্য পদের ব্যবহার করা হয়।
লিপ্ত পদগুলির উদাহরণ:
কর্তা-কর্ম সম্পর্ক:
- “ছাত্ররা বই পড়ছে”
- “গাছটি বাড়ছে”
- “আমি ঘুমাই”
বিশেষ্য-বিশেষণ সম্পর্ক:
- “লাল ফুল”
- “বড় বাড়ি”
- “সুন্দর মেয়ে”
সম্পর্ক-সম্পর্কিত সম্পর্ক:
- “আমার বাড়ি”
- “তার বই”
- “সেই গাছটি”
কারক-ক্রিয়া সম্পর্ক:
- “ছাত্ররা বই পড়ছে”
- “আমি ঘুমাই”
- “সে খেলছে”
ভোক্তা-ভুক্ত সম্পর্ক:
- “ছাত্রদের বই”
- “আমার গাড়ি”
- “তার ঘর”
লিপ্ত পদগুলির ব্যবহার বাক্যের অর্থকে স্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট করে। বাক্যের গঠন এবং অর্থ বোঝার জন্য লিপ্ত পদগুলির মধ্যে সম্পর্কগুলি বুঝতে হবে।