থ্যালাসেমিয়া কেন হয়?

থ্যালাসেমিয়া হল একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত রোগ। এই রোগে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিন কণার উৎপাদনে ত্রুটি হয়। থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতা বা “অ্যানিমিয়া”তে ভুগে থাকেন।

থ্যালাসেমিয়া দুটি ধরনের হতে পারে:

  • আলফা থ্যালাসেমিয়া: এই ধরনের থ্যালাসেমিয়ায় আলফা গ্লোবিন চেইন তৈরিতে ত্রুটি হয়। আলফা গ্লোবিন চেইন হিমোগ্লোবিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
  • বিটা থ্যালাসেমিয়া: এই ধরনের থ্যালাসেমিয়ায় বিটা গ্লোবিন চেইন তৈরিতে ত্রুটি হয়। বিটা গ্লোবিন চেইনও হিমোগ্লোবিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির লোহিত রক্তকণিকাগুলি স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট এবং কম টেকসই হয়। এই লোহিত রক্তকণিকাগুলি শরীরের চারপাশে কম অক্সিজেন পরিবহন করতে পারে। ফলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।

থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ। এই রোগটি হিমোগ্লোবিন জিনের ত্রুটির কারণে হয়। বাবা বা মা, কিংবা বাবা-মা উভয়েরই থ্যালাসেমিয়া জিন থাকলে বংশানুক্রমে এটি সন্তানের মধ্যে ছড়ায়।

থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গগুলি রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে। হালকা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোন উপসর্গ নাও থাকতে পারে। 

গুরুতর থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি দেখা দিতে পারে:

  • শ্বাসকষ্ট
  • দুর্বলতা
  • বমি বমি ভাব
  • মাথাব্যথা
  • হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি
  • জন্ডিস
  • অস্থি বৃদ্ধির সমস্যা

থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসার লক্ষ্য হল রক্তস্বল্পতা এবং অন্যান্য উপসর্গগুলির চিকিৎসা করা। 

চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে:

  • নিয়মিত রক্তদান: গুরুতর থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত রক্তদান করতে হয়।
  • অন্যান্য চিকিৎসা: কিছু ক্ষেত্রে, থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্যান্য চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে, যেমন:
  • লোহিত রক্তকণিকাগুলির জীবনকাল বাড়ানোর জন্য ওষুধ
  • প্লীহা অপসারণ
  • জটিলতাগুলির চিকিৎসা

থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধের জন্য, বিবাহের আগে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি দুজন ব্যক্তির মধ্যে একজনের থ্যালাসেমিয়া জিন থাকে, তাহলে তাদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে।