সংবেদন কাকে বলে?

সংবেদন হলো উদ্দীপনার প্রাথমিক চেতনা বা বোধ। বইরের জগতের কোন উদ্দীপনার সঙ্গে যখন ইন্দ্রিয়ের সংস্পর্শ ঘটে এবং ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে যুক্ত অন্তর্মুখী স্নায়ুর বহিঃপ্রাপ্ত উদ্দীপিত হয় এবং সেই উদ্দীপনা ঐ স্নায়ুর মাধ্যমে যখন মস্তিষ্কে পৌঁছায় তখন ঐ উদ্দীপক সম্বন্ধে যে প্রাথমিক চেতনা বা বোধের সঞ্চার হয় তাকেই সংবেদন বলে।

মনোবিদ সালি সংবেদনের সংজ্ঞা দিতে দিয়ে বলেছেন – “একটি অন্তর্মুখী স্নায়ুর বহিঃপ্রান্ত উদ্দীপিত হলে যখন এই উদ্দীপনা মস্তিষ্কে সঞ্চারিত হয় তখন তার দ্বারা সৃষ্ট সহজ মানসিক প্রক্রিয়া হলো সংবেদন।

পথ দিয়ে চলতে চলতে হঠাৎ এক ঝলক আলো চোখের ওপর এসে পড়লো। আমার চোখের ওপর আলো পড়তেই, সেই উদ্দীপনা চোখের মধ্যে অক্ষিপটের সঙ্গে যুক্ত অন্তর্মুখী স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছাল এবং উদ্দীপনার প্রাথমিক চেতনা বা বোধের সৃষ্টি হলো। প্রথমে আলোর যে প্রাথমিক চেতনা বা বোধ তা হলো সংবেদন এবং পরে এই সংবেদনকে যখন ব্যাখ্যা করলাম মোটর গাড়ীর হেড লাইটের বিচ্ছুরিত আলোক বলে, তখন তা হয়ে উঠল প্রত্যক্ষ। দেহের অভ্যন্তরস্থ কোন পরিবর্তনও উদ্দীপকের কাজ করতে পারে।

সংবেদন একটি অমূর্ত মানসিক অবস্থা কারণ, মানুষের মনে সংবেদনের কোন পৃথক ও স্বতন্ত্র সত্তা নেই; প্রত্যক্ষের সরলতম উপাদানস্বরূপে সংবেদনকে কল্পনা করে নেওয়া হয়।

বাইরের জগতের উদ্দীপক আমাদের ইন্দ্রিয়ের ওপর ক্রিয়া করে সংবেদন উৎপন্ন করে। এই সংবেদনের ফলে আমরা বস্তুর গুণগুলিকে জানতে পারি। বাইরের জগতের কোন উদ্দীপক দেহের অর্থাৎ মস্তিষ্কের এবং স্নায়ুমন্ডলীর মাধ্যমে মনের ওপর ক্রিয়া করে এবং তারই ফলে সংবেদন সৃষ্ট হয়। 

সুতরাং সংবেদনের তিনটি উপাদান। যথাঃ

১) উদ্দীপক, 
২) দেহ অর্থাৎ স্নায়ুতন্ত্র এবং 
৩) মন।

Leave a Comment