হ্যাকিং, ফিশিং, ভিশিং, স্প্যামিং, স্পুফিং এবং স্নিকিং

১. হ্যাকিং (Hacking)

কোনো কম্পিউটার সিস্টেম, নেটওয়ার্ক, ডেটার উপর অননুমোদিতভাবে অধিকার লাভ করার উপায়কে হ্যাকিং বলে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তির তথ্যের ক্ষতি সাধন করা কিংবা সিস্টেমের ক্ষতি করা আবার কোনো কোনো কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ত্রুটি জানান দেওয়া। যে সকল ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ এ ধরনের কাজের সাথে জড়িত তাদের হ্যাকার বলে।

২. ফিশিং (Phishing)

টোপ দিয়ে মাছ ধরার মতোই বিভিন্ন ধরনের ই-মেইল বা মেসেজের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারীকে নকল ওয়েবসাইট নিয়ে তার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেমন- অ্যাকসেস কোড, ক্রেডিট কার্ড নম্বর, পাসওয়ার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ইত্যাদি চুরি করা হয়। এক্ষেত্রে মেইল বা মেসেজগুলো এমন হয় যা দেখে মনে হয় মেইলটি বিশ্বাসযোগ্য ওয়েবসাইট থেকে এসেছে, যেখানে ব্যবহারকারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই করার অনুরোধ করা হয়। ব্যবহারকারী তার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সেখানে দিলে ফিশার তা সংগ্রহ করে ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন ধরনের বিপদে ফেলে, যা সম্পূর্ণভাবে প্রতারণামূলক।

৩. ভিশিং (Vishing বা Voice Phishing)

টেলিফোন বা অডিও ব্যবহারের মাধ্যমে ফিশিং করাই হলো ভয়েজ ফিশিং বা ফিশিং। টেলিফোন কল বা কম্পিউটারে ভয়েজ কলিং এর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে লটারির বিজয়ী হওয়ার সংবাদ দিয়ে কিংবা তাকে কেউ অর্থ পাঠাতে চায় এ ধরনের কথা বলে অথবা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশনের কথা বলে ব্যবহারকারীকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থিত একটি নকল ওয়েবসাইটে তার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদানের অনুরোধ জানায়। ব্যবহারকারী প্রভাবিত হয়ে তথ্য প্রদান করলে তার সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে Visher তার আর্ধিক বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষতিসাধন করে থাকে।

৪. স্প্যামিং (Spaming)

অনাকাঙ্খিত এবং অবাঞ্ছিত ই-মেইল বা মেসেজ পাঠানোকে স্প্যামিং বলা হয়। এ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের বলা হয় স্প্যামার। যখন কোনো ব্যবহারকারী ওয়েবসাইট ভিজিট করেন কিংবা কোনো গ্রুপের মেসেজ বোর্ডে প্রবেশ করেন তখন স্প্যামাররা সেখান থেকে ই-মেইল অ্যাড্রেস সংগ্রহ করার কাজে হারভেস্টার নামের সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে। সংগৃহীত ইমেইল অ্যাড্রেসটির ভ্যালিডিটি পরীক্ষার জন্য মেইলের নিচে To Stop Ad Click Here অথবা To Unsubscribe Click Here জাতীয় অপশন থাকে। ব্যবহারকারী সেখানে ক্লিক করলে তাকে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে নিয়ে যাওয়া হয় এবং স্প্যামার নিশ্চিত হয় যে অ্যাড্রেসটি সক্রিয় রয়েছে। তখন তারা অ্যাড্রেসটি স্প্যামিংয়ের জন্য তাদের ডেটাবেসে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে।

৫. স্পুফিং (Spoofing)

Spoof শব্দের অর্থ হলো ধোঁকা দেওয়া, কৌশল অবলম্বন করা অথবা প্রতারণা করা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি জগতে স্পুফিং হলো কোনো কম্পিউটার ব্যবহারকারী অথবা কম্পিউটার সিস্টেমের সাথে কৌশল অবলম্বন করে প্রতারণা করা। অর্থাৎ সাইবার অপরাধীরা যখন নিজের পরিচয় গোপন করে অথবা অন্য ব্যবহারকারীর পরিচিতি জাল করে বিশ্বস্ত সূত্রের ছদ্মবেশে কোনো কম্পিউটারের অ্যাকসেস / নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে চায় তখন তাকে স্পুফিং বলে। ইন্টারনেটে স্পুফিং বিভিন্নভাবে হয়ে থাকে। যেমন- ইমেইল স্পুফিং, আইপি স্পুফিং, অ্যাড্রেস বার স্পুফিং ইত্যাদি।

৬. স্নিকিং (Sneaking)

Sneak শব্দের অনেক ছায়া শব্দ রয়েছে যার সবগুলোর সম্পৃক্ততা ঘটে গোপন বা চুরি কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। সন্তর্পণে ও ব্যবহারকারীদের চোখ এড়িয়ে কম্পিউটার ও নেটওয়ার্ক সিস্টেমে প্রবেশ করে তার প্রয়োজনীয় তথ্য নিজের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়াকে স্নিকিং বলে। এ ধরনের কার্যক্রম সাইবার ক্রাইমের আওতায় পড়ে। নানাবিধ প্রক্রিয়ায় এ কাজ সম্পন্ন করা যায়।