যখন কারো হৃদযন্ত্রের কোনো অংশ রক্ত জমাট বাঁধার কারণে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় কিংবা বাধাগ্রস্থ হয় তখন হৃদপিন্ডের কোষ বা হৃদপেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর ফলেই হার্ট অ্যাটাক ঘটে।
হার্ট অ্যাটাক কি?
হার্ট অ্যাটাক হ’ল যখন হৃৎপিণ্ডে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহ না পায়, যার ফলে হৃৎপেশীর ক্ষতি হয়।
হার্ট অ্যাটাক এর কারণ
- কোরোনারি ধমনীতে বাধা: হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ করে এমন ধমনীগুলোকে কোরোনারি ধমনী বলা হয়। কোলেস্টেরলের প্লাক জমা হয়ে এই ধমনীগুলো সংকুচিত বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যাকে করোনারি আর্টেরি ডিজিজ (CAD) বলা হয়। CAD হল হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ কারণ।
- স্প্যাম: কোরোনারি ধমনীগুলি হঠাৎ সংকুচিত হলে তাকে স্প্যাম বলা হয়। এর ফলে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং অন্যান্য হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- অন্যান্য কারণ: উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান এবং পারিবারিক ইতিহাসও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষণ
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হতে পারে, তবে সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- বুকে ব্যথা, চাপ, ভার বা অস্বস্তি অনুভূত হয়
- বাম বাহু, কাঁধ বা চোয়ালে ব্যথা অনুভূত হয়
- শ্বাসকষ্ট হতে পারে
- বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে
- মাথা ঘোরা বা হালকা লাগা
- অত্যধিক ঘাম হওয়া
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ
জীবনধারার পরিবর্তন এবং চিকিৎসার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। জীবনধারার পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে:
- ধূমপান ত্যাগ করা
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা
হার্ট অ্যাটাক এর চিকিৎসা
হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসার লক্ষ্য হল হৃৎপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ পুনরুদ্ধার করা এবং হৃৎপেশীর ক্ষতি হ্রাস করা। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে:
- ওষুধ: রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করার জন্য ওষুধ, বুকে ব্যথা কমাতে ওষুধ এবং রক্তচাপ এবং হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ।
- অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি: হৃৎপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ পুনরুদ্ধার করার জন্য একটি ছোট নল ব্যবহার করে ধমনীতে বাধা খোলা হয়।
- করোনারি বাইপাস সার্জারি: বুকে একটি নতুন রক্তনালী তৈরি করে আবদ্ধ ধমনী বাইপাস করা হয়।
হার্ট অ্যাটাক একটি গুরুতর চিকিৎসা জরুরী অবস্থা। যদি আপনি মনে করেন যে আপনার বা আপনার পরিচিত কারও হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে তাহলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা নিন।