মৌলিক অধিকার হল সেই অধিকারগুলি যা একজন ব্যক্তির স্বাভাবিকভাবেই রয়েছে এবং যা রাষ্ট্র দ্বারা স্বীকৃত এবং সংরক্ষিত। এই অধিকারগুলি ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য অপরিহার্য।
মৌলিক অধিকারগুলিকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:
- ব্যক্তিগত অধিকার: এই অধিকারগুলি ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত। এর মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা, সাম্য, ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, এবং সম্পত্তির অধিকার।
- সামাজিক অধিকার: এই অধিকারগুলি ব্যক্তির মৌলিক চাহিদা পূরণের সাথে সম্পর্কিত। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান, এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার অধিকার।
মৌলিক অধিকারগুলিকে রাষ্ট্রের উপর একটি বাধ্যবাধকতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাষ্ট্রের উচিত এই অধিকারগুলিকে রক্ষা করা এবং এর নাগরিকদের জন্য এগুলি প্রদান করা।
বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগ “মৌলিক অধিকার” অনুসারে, বাংলাদেশের নাগরিকদের 36টি মৌলিক অধিকার রয়েছে। এই অধিকারগুলির মধ্যে রয়েছে:
- জীবন ও ব্যক্তির নিরাপত্তার অধিকার
- স্বাধীনতা ও বিচারের অধিকার
- ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা
- মতপ্রকাশ ও সংগঠনের অধিকার
- সম্পত্তির অধিকার
- শিক্ষার অধিকার
- স্বাস্থ্যসেবার অধিকার
- কর্মসংস্থানের অধিকার
- জীবনযাত্রার মান উন্নত করার অধিকার
মৌলিক অধিকারগুলি একটি রাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভিত্তি। এই অধিকারগুলি নাগরিকদের স্বাধীনভাবে চিন্তাভাবনা, কথা বলা, এবং কাজ করার অধিকার প্রদান করে। এটি রাষ্ট্রের স্বৈরাচারী হওয়ার হাত থেকে নাগরিকদের রক্ষা করে।
মৌলিক অধিকার কয়টি ও কী কী?
মৌলিক অধিকার বলতে এমন অধিকারকে বোঝায় যা সকল মানুষেরই থাকে, জন্মগতভাবে। এই অধিকারগুলি রাষ্ট্র বা সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্ত হয় না, বরং এগুলি মানুষের মর্যাদা ও স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
মৌলিক অধিকারগুলিকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়:
- ব্যক্তিগত অধিকার: এই অধিকারগুলি মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করে। এর মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা, জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা, ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, বিচারের স্বাধীনতা ইত্যাদি।
- সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার: এই অধিকারগুলি মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মঙ্গল নিশ্চিত করে। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের সংবিধানে মোট ৫২টি মৌলিক অধিকার রয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টি ব্যক্তিগত অধিকার এবং ৫টি সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার।
ব্যক্তিগত অধিকারগুলি হল
- আইনের দৃষ্টিতে সমতা
- আইনের আশ্রয়লাভের অধিকার
- জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার
- বৈষম্য নিষিদ্ধকরণ
- ধর্মীয় স্বাধীনতা
- চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা
- সংগঠনের স্বাধীনতা
- বিচারের স্বাধীনতা
- নির্যাতন ও অমানবিক অত্যাচার নিষিদ্ধকরণ
- ব্যক্তিগত ও পারিবারিক গোপনীয়তা
- গৃহস্থালির অধিকার
- বাক ও লেখার স্বাধীনতা
- প্রকাশের স্বাধীনতা
- পেশা ও বৃত্তি নির্বাচনের স্বাধীনতা
- প্রবেশ ও বহির্গমনের স্বাধীনতা
- সম্পত্তির অধিকার
- রাষ্ট্রের নিকট ক্ষুব্ধ অভিযোগ করার অধিকার
- রাষ্ট্রের নিকট ক্ষতিপূরণের দাবি করার অধিকার
সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকারগুলি হল
- শিক্ষার অধিকার
- স্বাস্থ্যসেবার অধিকার
- বাসস্থানের অধিকার
- কর্মসংস্থানের অধিকার
- সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার
মৌলিক অধিকারগুলি রাষ্ট্রের উপর একটি বাধ্যবাধকতা। রাষ্ট্রকে এই অধিকারগুলি রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন ১: মৌলিক অধিকার কী?
উত্তর: মৌলিক অধিকার বলতে এমন অধিকারকে বোঝায় যা সকল মানুষেরই থাকে, জন্মগতভাবে। এই অধিকারগুলি রাষ্ট্র বা সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্ত হয় না, বরং এগুলি মানুষের মর্যাদা ও স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
প্রশ্ন ২: মৌলিক অধিকার কত প্রকার?
উত্তর: মৌলিক অধিকারগুলিকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়:
- ব্যক্তিগত অধিকার: এই অধিকারগুলি মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করে। এর মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা, জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা, ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, বিচারের স্বাধীনতা ইত্যাদি।
- সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার: এই অধিকারগুলি মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মঙ্গল নিশ্চিত করে। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৩: মৌলিক অধিকারের উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: মৌলিক অধিকারের উদ্দেশ্য হল মানুষের মর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষা করা। এই অধিকারগুলি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে এবং একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে সহায়তা করে।
প্রশ্ন ৪: মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য কী করা হয়?
উত্তর: মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
- আইনের মাধ্যমে মৌলিক অধিকারগুলিকে সুরক্ষিত করা।
- মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য সংবিধানে বিধান রাখা।
- মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
- মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
প্রশ্ন ৫: মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হলে কী করা যায়?
উত্তর: মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হলে, ঐ অধিকার লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও, রাষ্ট্রের কাছে ক্ষুব্ধ অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে।
প্রশ্ন ৬: মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য আমার করণীয় কী?
উত্তর: মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য সকলের সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এছাড়াও, মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করার জন্য বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে। এই সংগঠনগুলির সাথে যোগাযোগ করে মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করা যেতে পারে।
মৌলিক অধিকার সম্পর্কে কিছু অতিরিক্ত বিষয়:
- মৌলিক অধিকারগুলি সার্বজনীন। অর্থাৎ, এই অধিকারগুলি সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা অন্য কোন বৈষম্যের ভিত্তিতে নয়।
- মৌলিক অধিকারগুলি অবিচ্ছেদ্য। অর্থাৎ, এই অধিকারগুলির একটির সাথে অন্যটির সম্পর্ক রয়েছে। একটি অধিকার লঙ্ঘন করলে অন্য অধিকারও লঙ্ঘিত হতে পারে।
- মৌলিক অধিকারগুলি অপরিহার্য। অর্থাৎ, এই অধিকারগুলি মানুষের জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য। এই অধিকারগুলি ছাড়া মানুষ স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে না।
মৌলিক অধিকারগুলি মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই অধিকারগুলি রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব।