মূল্যবোধ সৃষ্টিতে ও জবাবদিহি প্রক্রিয়ায় হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা

মূল্যবোধ হলো ব্যক্তি ও সমাজের চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা প্রভৃতির সমন্বয়ে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা একটি মানদণ্ড যার দ্বারা মানুষ কোন বিষয়ের ভাল-মন্দ বিচার করে ভালোকে গ্রহণ ও মন্দকে বর্জন করে। নিম্নে মূল্যবোধ সৃষ্টিতে হিসাববিজ্ঞান কিভাবে সহায়তা করে তা আলোচনা করা হল-

১. সততা ও দায়িত্ববোধের বিকাশঃ হিসাবরক্ষণের ক্ষেত্রে হিসাববিজ্ঞানের রীতি নীতি ও কলাকৌশল যথাযথভাবে অনুসরণ করা হলে আর্থিক দুর্নীতি, জালিয়াতি, সম্পদ ইত্যাদির উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং হিসাবের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়। আর বছরের পর বছর এর অনুসরণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও দায়িত্ববোধ বিকশিত হয়।

২. ঋণ পরিশোধ সচেতনতা সৃষ্টিঃ হিসাববিজ্ঞান ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে ঋণ পরিশোধে সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং তাদের মূল্যবোধ জাগ্রত করে। ফলে ঋণ খেলাপী হবার সম্ভাবনা হ্রাস পায়।

৩. ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টিঃ সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় পরিহার ধর্মীয় মূল্যবোধের অংশ। সঠিক হিসাব সংরক্ষণ করলে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে আয় বুঝে ব্যয় করার মানসিকতা সৃষ্টি ও সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।

৪. সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধ সৃষ্টিঃ সরকারের আয়ের অন্যতম উৎসগুলো হচ্ছে ভ্যাট, কাস্টমস্ ডিউটি, আয়কর প্রভৃতি। হিসাববিজ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সঠিক আয় ও ব্যয় নির্ণয় করা সম্ভব। ফলে কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা লোপ পায়।

৫. জালিয়াতি ও প্রতারণা প্রতিরোধঃ সুষ্ঠু হিসাব ব্যবস্থা প্রচলিত থাকলে সম্ভাব্য শাস্তি ও দুর্নামের ভয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে জালিয়াতি, তহবিল তছরূপ, প্রতারণাসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রবণতা হ্রাস পায়।

Leave a Comment