ভৌগলিক পরিবেশ কাকে বলে?

ভৌগলিক পরিবেশ বলতে কোনো স্থানের ভৌগোলিক উপাদানসমূহের সমষ্টিকে বোঝায়। এই উপাদানসমূহের মধ্যে রয়েছে:

  • ভূমিরূপ: পাহাড়, সমভূমি, উপত্যকা, নদী, হ্রদ, সমুদ্র, মহাসাগর ইত্যাদি।
  • জলবায়ু: তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, আর্দ্রতা ইত্যাদি।
  • প্রাকৃতিক সম্পদ: খনিজ সম্পদ, জল সম্পদ, বন সম্পদ, মৃত্তিকা সম্পদ ইত্যাদি।

ভৌগলিক পরিবেশ কোনো স্থানের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • জীবনযাত্রা: ভৌগলিক পরিবেশ মানুষের জীবনযাত্রার উপর প্রভাব ফেলে। যেমন, উষ্ণ জলবায়ুতে মানুষ হালকা পোশাক পরিধান করে, আর শীতল জলবায়ুতে মানুষ ভারী পোশাক পরিধান করে।
  • অর্থনীতি: ভৌগলিক পরিবেশ মানুষের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে। যেমন, খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ এলাকায় শিল্পায়ন বেশি হয়।
  • সংস্কৃতি: ভৌগলিক পরিবেশ মানুষের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। যেমন, সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী মানুষের সংস্কৃতিতে মাছ ধরা ও নাবিকদের জীবনের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলি প্রাধান্য পায়।

ভৌগলিক পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি কোনো স্থানের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করে।

ভৌগলিক পরিবেশের কিছু উদাহরণ হল:

  • বাংলাদেশের ভৌগলিক পরিবেশ: বাংলাদেশ একটি উষ্ণমণ্ডলীয় দেশ। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। বাংলাদেশের জলবায়ু ক্রান্তীয় মৌসুমি। এ দেশের প্রধান ভূমিরূপ হল সমভূমি। বাংলাদেশের প্রধান নদী হল পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি। বাংলাদেশের প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ হল বন সম্পদ ও জল সম্পদ। বাংলাদেশের প্রধান বসতি হল গ্রাম। বাংলাদেশের প্রধান পরিবহন ব্যবস্থা হল সড়ক ও নৌপথ। বাংলাদেশের প্রধান কৃষি ফসল হল ধান, পাট, গম, ডাল ইত্যাদি। বাংলাদেশের প্রধান শিল্প হল কৃষিভিত্তিক শিল্প।
  • পৃথিবীর ভৌগলিক পরিবেশ: পৃথিবীর ভূমিরূপ অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। এতে পাহাড়, সমভূমি, উপত্যকা, নদী, হ্রদ, সমুদ্র, মহাসাগর ইত্যাদি রয়েছে। পৃথিবীর জলবায়ুও অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। এতে উষ্ণমণ্ডলীয়, নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলীয়, তুন্দ্রা, মরুভূমি ইত্যাদি জলবায়ু রয়েছে। পৃথিবীর প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ হল খনিজ সম্পদ, জল সম্পদ, বন সম্পদ, মৃত্তিকা সম্পদ ইত্যাদি। পৃথিবীর প্রধান বসতি হল শহর ও গ্রাম। পৃথিবীর প্রধান পরিবহন ব্যবস্থা হল সড়ক, রেল, নৌপথ, বিমানপথ ইত্যাদি। পৃথিবীর প্রধান কৃষি ফসল হল ধান, গম, ভুট্টা, পাট ইত্যাদি। পৃথিবীর প্রধান শিল্প হল কৃষিভিত্তিক শিল্প, খনিজভিত্তিক শিল্প, পরিষেবাভিত্তিক শিল্প ইত্যাদি।

ভৌগলিক পরিবেশ কোনো স্থানের পরিচয় বহন করে। এটি কোনো স্থানকে অন্য স্থান থেকে আলাদা করে।

ভৌগলিক পরিবেশের প্রকারভেদ:

ভৌগলিক পরিবেশকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:

  • প্রাকৃতিক পরিবেশ: ভূমিরূপ, জলবায়ু, প্রাকৃতিক সম্পদ ইত্যাদি।
  • মানবসৃষ্ট পরিবেশ: বসতি, পরিবহন ব্যবস্থা, কৃষি, শিল্প ইত্যাদি।

প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে। কিন্তু মানবসৃষ্ট পরিবেশ মানুষের নিয়ন্ত্রণে থাকে।