দেশে প্রতি বছর বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয় কেন?

দেশে প্রতি বছর রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয়।

বাংলাদেশ প্রধানত আমদানি নির্ভর দেশ। প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে খাদ্যসামগ্রী, কাঁচামাল, মেশিনারীজ, ঔষধ, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।

অপরপক্ষে বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত দ্রব্য, তৈরি পোশাক, কৃষিজাত দ্রব্য ইত্যাদি রপ্তানি করা হয়। এক্ষেত্রে রপ্তানি থেকে আমদানি বেশি করতে হয় বলে প্রতি বছর বিরাট অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয়। তবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ এ ঘাটতি পূরণে সহায়ক।

দেশে প্রতি বছর বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয় বিভিন্ন কারণে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • নিজের দেশে উৎপাদিত পণ্যের তুলনায় আমদানিকৃত পণ্যের চাহিদা বেশি থাকা। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ, তাই এখানে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। কিন্তু অনেক পণ্য আমাদের দেশে উৎপাদিত হয় না, তাই সেগুলো আমদানি করতে হয়।
  • আমদানিকৃত পণ্যের দাম রফতানিকৃত পণ্যের দামের তুলনায় বেশি হওয়া। উদাহরণস্বরূপ, অপরিশোধিত তেল এবং কয়লা আমাদের দেশের প্রধান আমদানিকৃত পণ্য। এই পণ্যগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি।
  • রফতানিকৃত পণ্যের মান বা গুণগতমানের অভাব। অনেক সময় আমাদের দেশের রফতানিকৃত পণ্যের মান বা গুণগতমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের তুলনায় কম হয়। ফলে সেগুলোর চাহিদা কম থাকে।
  • বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম ও চাহিদার পরিবর্তন। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম ও চাহিদা নিয়মিত পরিবর্তিত হয়। এই পরিবর্তনের ফলে বাণিজ্য ঘাটতি বা উদ্বৃত্ত দেখা দিতে পারে।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, বাণিজ্য ঘাটতির প্রধান কারণ হল আমদানিকৃত পণ্যের চাহিদা বেশি থাকা এবং আমদানিকৃত পণ্যের দাম রফতানিকৃত পণ্যের দামের তুলনায় বেশি হওয়া। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ, তাই এখানে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। কিন্তু অনেক পণ্য আমাদের দেশে উৎপাদিত হয় না, তাই সেগুলো আমদানি করতে হয়। আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে অপরিশোধিত তেল, কয়লা, ওষুধ, যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি। এই পণ্যগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি।

বাণিজ্য ঘাটতি দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। এটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমিয়ে দেয় এবং দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটায়। এছাড়াও, বাণিজ্য ঘাটতি দেশের কর্মসংস্থান ও উৎপাদনশীলতা হ্রাস করতে পারে।

বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এর মধ্যে রয়েছে রফতানি উৎসাহিত করা, আমদানি হ্রাস করা এবং আমদানিকৃত পণ্যের দাম কমানো।