টিটেনাস ইনজেকশন কেন দিতে হয়? কারণ, ইনজেকশন দেয়ার নিয়ম, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

টিটেনাস ইনজেকশন কেন দিতে হয়?

টিটেনাস ইনজেকশন দেওয়া হয় ধনুষ্টঙ্কার (Tetanus) রোগ প্রতিরোধে। ধনুষ্টঙ্কার একটি মারাত্মক রোগ যা ক্লস্ট্রিডিয়াম টিটেনি (Clostridium tetani) নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। এই ব্যাকটেরিয়া মাটি, ধুলো, কাদা, পশুর মলমূত্র ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। নোংরা বা ধারালো বস্তু দ্বারা আঘাত বা ক্ষত পেলে এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

টিটেনাস ইনজেকশনে টিটেনাস টক্সয়েড থাকে, যা শরীরে টিটেনাস রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। এই ইনজেকশন দেওয়ার ফলে শরীরে টিটেনাস টক্সয়েডের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডি শরীরে টিটেনাস রোগের টক্সিনকে ধ্বংস করে দেয়।

টিটেনাস ইনজেকশন দেওয়ার কারণ

টিটেনাস ইনজেকশন দেওয়ার কারণগুলি হল:

  • ধনুষ্টঙ্কার রোগ প্রতিরোধে: টিটেনাস ইনজেকশন ধনুষ্টঙ্কার রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। টিটেনাস ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে টিটেনাস রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে।
  • ধনুষ্টঙ্কারের ঝুঁকি কমাতে: নোংরা বা ধারালো বস্তু দ্বারা আঘাত বা ক্ষত পেলে ধনুষ্টঙ্কারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এই ধরনের আঘাত বা ক্ষত পেলে টিটেনাস ইনজেকশন দেওয়া উচিত।
  • গর্ভাবস্থায়: গর্ভাবস্থায় টিটেনাস ইনজেকশন দেওয়া শিশুর ধনুষ্টঙ্কারের ঝুঁকি কমায়।

টিটেনাস ইনজেকশনের নিয়ম

টিটেনাস ইনজেকশনের নিয়ম হল:

শিশুদের জন্য: জন্মের পরপর এক ডোজ, ৪-৬ সপ্তাহ পর এক ডোজ, ১৬-১৮ মাস পর এক ডোজ এবং ১১-১২ বছর পর এক ডোজ দেওয়া হয়।

বয়স্কদের জন্য: টিটেনাস ইনজেকশনের নিয়ম হল: 

১১-১২ বছর পর থেকে প্রতি ১০ বছরে এক ডোজ।

যদি কেউ টিটেনাস ইনজেকশনের পূর্ণ কোর্স নেয়নি, তাহলে তাকে প্রথমে তিনটি ডোজ দেওয়া হয়। এরপর প্রতি ১০ বছরে এক ডোজ দেওয়া হয়।

টিটেনাস ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

টিটেনাস ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি হল:

  • ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা, লালভাব, ফোলাভাব।
  • মাথাব্যথা, ক্লান্তি, জ্বর।
  • বমি বমি ভাব, বমি।

এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি সাধারণত হালকা হয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে সেরে যায়।