গ্লাইকোলাইসিস কাকে বলে?

গ্লাইকোলাইসিস কাকে বলে?

যে প্রক্রিয়ায় কোষের সাইটোপ্লাজমে এক অণু গ্লুকোজ বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জারিত হয়ে দুই অণু পাইরুভিক অ্যাসিডে পরিণত হয় তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে। গ্লাইকোলাইসিসকে EMP পাথওয়ে বা সাইটোপ্লাজমিক শ্বসনও বলা হয়। এ প্রক্রিয়ার জন্য কোনো অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে না, তাই গ্লাইকোলাইসিস সবাত ও অবাত উভয় শ্বসনেই প্রথম ধাপ।

গ্লাইকোলাইসিস হল একটি বিপাকীয় পথ যা গ্লুকোজকে পাইরুভেটে রূপান্তরিত করে। এই প্রক্রিয়ায়, গ্লুকোজকে দুটি পাইরুভেট অণুতে বিভক্ত করা হয়, যা আরও বিপাক হতে পারে বা শক্তির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

গ্লাইকোলাইসিস কোষের তরল অংশ, সাইটোসোলে ঘটে। এই প্রক্রিয়াটি দশটি ধাপের সমন্বয়ে গঠিত, যা দুটি প্রধান পর্যায়ে বিভক্ত করা যেতে পারে:

প্রথম পর্যায়: এই পর্যায়ে, গ্লুকোজ একটি ATP অণু থেকে একটি ফসফেট গ্রুপ গ্রহণ করে গ্লুকোজ 6-ফসফেট তৈরি করে।

দ্বিতীয় পর্যায়: এই পর্যায়ে, গ্লুকোজ 6-ফসফেটকে দুটি ট্রাইোজ ফসফেট অণুতে বিভক্ত করা হয়। এই বিভাজনে দুটি ATP অণু তৈরি হয় এবং একটি NADH অণু হ্রাসপ্রাপ্ত হয়।

গ্লাইকোলাইসিস একটি অক্সিডেটিভ প্রক্রিয়া, যার অর্থ এটি অক্সিজেন প্রয়োজন হয় না। তবে, এটি একটি এনার্জি-প্রদানকারী প্রক্রিয়া, যার অর্থ এটি ATP অণু তৈরি করে।

গ্লাইকোলাইসিস কোষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি শক্তির একটি প্রাথমিক উৎস। এটি কোষের শ্বসন প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা কোষের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি তৈরি করে। গ্লাইকোলাইসিস ছাড়া, কোষগুলি বেঁচে থাকতে এবং সঠিকভাবে কাজ করতে সক্ষম হবে না।

গ্লাইকোলাইসিসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যকারিতা হল:

  • শক্তি উৎপাদন: গ্লাইকোলাইসিস ATP অণু তৈরি করে, যা কোষের জন্য শক্তির একটি প্রধান উৎস।
  • গ্লাইকোজেন ভাঙা: গ্লাইকোলাইসিস গ্লাইকোজেনকে গ্লুকোজতে রূপান্তর করতে পারে, যা শক্তির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি: গ্লাইকোলাইসিস অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

গ্লাইকোলাইসিস বিভিন্ন কোষে ঘটে, যেমন পেশী কোষ, লিভার কোষ এবং মস্তিষ্ক কোষ।