খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা ও শ্রেণিবিভাগ

খাদ্য কাকে বলে?

যেসব জৈব উপাদান জীবের দেহ গঠন, ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন ও শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় তাদের খাদ্য বলে।

খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা

খাদ্যদ্রব্য আমাদের দেহের প্রধানত তিনটি প্রয়োজন সাধন করে থাকে। অর্থাৎ মানবদেহে খাদ্যের কাজ প্রধানত তিনটি। যথা:

১. দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধিসাধন

২. দেহে তাপ ও শক্তি উৎপাদন

৩. দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

খাদ্যের উপাদান

খাদ্য অনেকগুলো রাসায়নিক বস্তুর সমন্বয়ে গঠিত। এই রাসায়নিক বস্তুগুলোকেই খাদ্যের উপাদান বলে। খাদ্য উপাদান মোট ৬টি। যথাঃ প্রোটিন (Protein), শর্করা (Carbohydrate), স্নেহ (Fat), খনিজ লবণ (Minerals), ভিটামিন (Vitamin) ও পানি (Water)।

অধিকাংশ খাদ্যবস্তুতে একাধিক উপাদান উপস্থিত থাকে এবং এক বা একাধিক কাজ করতে পারে। কেবল মাত্র একটি উপাদানে গঠিত এমন খাদ্যবস্তুর সংখ্যা খুবই কম। যেমন: চিনি, সরিষার তেল।

খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ

খাদ্য দ্রব্যসমূহকে প্রধানত দুইটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে।

১. দেহাভ্যন্তরে খাদ্যের কাজের প্রকারভেদ

২. খাদ্যের উপাদান অনুযায়ী

১. দেহাভ্যন্তরে কাজের প্রকারভেদে খাদ্যকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে।

ক) ক্ষয়পূরক এবং বৃদ্ধি সহায়ক খাদ্য: প্রোটিন দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধিসাধনে প্রধানত সহায়তা করে থাকে। ধাতব লবণসমূহ দেহ গঠনে সহায়তা করে থাকে। তাই যেসকল খাদ্যে প্রোটিন ও ধাতবলবণ যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়। সেগুলোকে ক্ষয়পূরক ও বৃদ্ধি সহায়ক খাদ্য বলে। যেমন: মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, বাদাম, বিচি ইত্যাদি।

খ) তাপ ও শক্তি উৎপাদক খাদ্য: যে সকল খাদ্য শরীরে তাপ ও শক্তি যোগায়, সেগুলোকে তাপ ও শক্তিদায়ক খাদ্য বলে। যেমন: চাল, গম, মুড়ি, চিড়া, খই, আলু, কচু, পাকা কলা, গুড়, চিনি, মিষ্টি, তেল, ঘি, মাখন ইত্যাদি।

গ) দেহের রোগ-প্রতিরোধক খাদ্য: যে সকল খাদ্যের অভাবে আমাদের দেহের স্বাভাবিক ক্রিয়া সুসম্পন্ন হতে পারে না এবং দেহ নানা প্রকার অভাবজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে সেগুলোকে রোগ-প্রতিরোধক খাদ্য বলে। যেমন: সব ধরনের সবুজ ও রঙিন শাক-সবজি, ফল, দুধ, ডিম ইত্যাদি।

২. উপাদান অনুযায়ী খাদ্যবস্তুকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা  হয়েছে।

ক) প্রোটিন বহুল খাদ্য: মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, সয়াবিন।

খ) কার্বোহাইড্রেট বহুল খাদ্য: চিনি, গুড়, মিছরি, শরবত, মুড়ি, চিড়া, ভাত, রুটি ইত্যাদি।

গ) স্নেহবহুল খাদ্য: তেল, ঘি, মাখন, চর্বি ইত্যাদি।

ঘ) ভিটামিন ও ধাতব লবণ বহুল খাদ্য: সবুজ শাক সবজি, বিভিন্ন প্রকার ফল, তরিতরকারি ইত্যাদি।