আয়নিক যৌগের বৈশিষ্ট্য

আয়নিক যৌগগুলি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তারা লবণ, সাবান, প্রসাধনী, ঔষধ, এবং অন্যান্য অনেক পণ্যে পাওয়া যায়।

আয়নিক যৌগ কি?

ইলেকট্রন বর্জন ও গ্রহন করে বিপরীত চার্জযুক্ত আয়ন সৃষ্টির মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণের ফলে দুটি পরমাণুর মধ্যে আয়নিক বন্ধন সৃষ্টির মাধ্যমে যে যৌগের সৃষ্টি হয় তাকে আয়নিক বন্ধন বলে।

আয়নিক যৌগের গঠন হল একটি ধনাত্মক আয়ন (ক্যাটায়ন) এবং একটি ঋণাত্মক আয়ন (অ্যানায়ন) এর মধ্যে আকর্ষণ দ্বারা। 

উদাহরণস্বরূপ, সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) একটি আয়নিক যৌগ যা সোডিয়াম ক্যাটায়ন (Na+) এবং ক্লোরাইড অ্যানায়ন (Cl) দ্বারা গঠিত।

আয়নিক যৌগের বৈশিষ্ট্য

আয়নিক যৌগের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ-

স্ফটিক গঠনঃ আয়নিক পদার্থ কঠিন অবস্থায় স্ফটিকারে অবস্থান করে।

বিদ্যুৎ পরিবাহিতাঃ আয়নিত যৌগ কঠিন অবস্থায় বিদ্যুৎ অপরিবাহী। তবে বিগলিত ও দ্রবীভূত অবস্থায় এরা বিদ্যুৎ পরিবহন করে।

দ্রাব্যতাঃ আয়নিক যৌগগুলো মেরুক বা পোলার তরলে অধিক দ্রবণীয় এবং অমেরুক বা অপোলার তরলে প্রায় অদ্রাব্য।

গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্কঃ আয়নিক স্ফটিকের আয়নগুলো স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণের ফলে দৃঢ় সংঘবদ্ধভাবে পরস্পরের সাথে আবদ্ধ থাকে। এদেরকে পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন করতে প্রচুর তাপশক্তির প্রয়োজন হয়। ফলে গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক উচ্চতর।

সমরূপতাঃ একই রকম ইলেকট্রনিক গঠনবিশিষ্ট আয়নিক যৌগের স্ফটিক গঠনেও একইরূপ হবে। একে সমরূপতা বলে।

পোলারিটিঃ আয়নিক যৌগে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক আয়নগুলো পরস্পরের আকর্ষণের প্রভাবে অনুতে আবদ্ধ থাকে বলে প্রতিটি অণু দ্বিমেরুত্ব প্রাপ্ত হয়।

সক্রিয়তাঃ জলীয় দ্রবণে আয়নিক যৌগের আয়নগুলো বিক্ষিপ্ত হয়ে সমস্ত দ্রবণব্যাপী ছড়িয়ে থাকে। ফলে জলীয় দ্রাবকে দুটি আয়নিক যৌগের রাসায়নিক বিক্রিয়া এতো দ্রুত সম্পন্ন হয় যে তার গতি নির্ণয় করা বেশ কঠিন। নন-আয়নিক যৌগের ক্ষেত্রে বিক্রিয়া সাধারণত অতিমন্থর গতিতে সংঘটিত হয়।

আয়নিক যৌগের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে:

  • আয়নিক যৌগের গলনাংক ও স্ফূটনাংক অনেক বেশি হয়ে থাকে।
  • আয়নিক যৌগগুলো কঠিন অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে না কিন্তু গলিত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে।
  • অধিকাংশ আয়নিক যৌগই পানিতে দ্রবীভূত হয়।
  • অধিকাংশ আয়নিক যৌগই কেলাসাকার বা দানাদার হয়ে থাকে।
  • সকল আয়নিক যৌগেই পোলারিটি ধর্ম বিদ্যমান।